Know info before watch, but no Spoiler

'Iron Man' নাকি রবার্ট ডাউনি জুনিয়র কার জনপ্রিয়তা বেশি!

'Iron Man' নাকি রবার্ট ডাউনি জুনিয়র কার জনপ্রিয়তা বেশি!
Iron Man vs RDJ
২০০৮ সালের টনি স্টার্ক/আয়রনম্যানের আগে ও পরে কতশত সুপারহিরো মুভির লাইভ একশান এসেছে। কিন্তু কোনটাই টনি স্টার্কের মত জনপ্রিয়তা পায় নি। এর কারন প্রশ্নের জবাবটা হয়তো হবে "রবার্ট ডাউনি জুনিয়র"। দ্যা এভেঞ্জার মুভির একটা ডায়লগ আছে টনি স্টার্কের। যেখানে ক্যাপ্টেন আমেরিকা অকা স্টিভ রজার্স টনি স্টার্ককে বলে " বিগ ম্যান উইত এ স্যুট অফ এন আর্মার,  টেক দ্যাট অফ হোয়াট ইউ আর?" যার জবাবে টনি স্টার্ক বলে "জিনিয়াস, বিলিয়নিয়ার, প্লেবয়, ফিলেন্থ্রোপিস্ট"। এই এক ডায়লগেই  ইগোয়েস্টিক টনি স্টার্কের চরিত্র ফুটে উঠে। আর এই টনি স্টার্কের চরিত্র রবার্ট ডাউনি জুনিয়র ছাড়া কেউই এভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারতো না। কারন ডাউনি জুনিয়রই যে রিয়েল লাইফ টনি স্টার্ক।

রবার্ট ডাউনি সিনিয়র ছিল পলিটিশিয়ান, হলিউডের এক্টর, ডিরেক্টর, প্রডিউসার, রাইটার। ছোট থেকেই তাই ডাউনি জুনিয়রের হলিউডে পদচারণ। মায়ের সাথে বাবার ডিভোর্সের পরেই বাবার সাথে থাকা শুরু করে ডাউনি জুনিয়র। কিছুদিন বাদে হাই স্কুলের পাঠ চুকিয়ে পুরোপুরি এক্টিং ক্যারিয়ারে মন দিতে চাইলো। কিছুদিন ব্যালে শিখতে কাটিয়েছে ইংল্যান্ডেও যেন এক্টিং ক্যারিয়ারটা আর শক্ত ভাবে গড়ে উঠে। ব্রিটিশ একসেন্টটা আসে সেখান থেকেই।  ১৯৯২ সালে " চ্যাপলিন" মুভির জন্য পেয়েছিল একাডেমি এওয়ার্ড মনোনয়নও। এ যেন মহাতারকার আগমনের জানান দেয়া ছিল। কিন্তু পতন দেখতে খুব বেশিদিন সময়ও লাগে নি। ডাউনি সিনিয়র ছিলেন ড্রাগ এডিক্ট। আর ডাউনি জুনিয়রের মত তার বাবার ভালবাসা দেখানোর একটা মাধ্যম ছিল ছেলেকেও সাথে করে ড্রাগ নেয়া। আর যার ফলে ডাউনি জুনিয়র নিজের প্রথম মারিজুয়ানা নেয় মাত্র ৬ বছর বয়সে৷ যদিও ডাউনি সিনিয়র শেষদিকে নিজের এহেন কর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়েছিল। ৯৬ সাল থেকে ডাউনি জুনিয়রকে কোর্টের চার দেয়ালেই ঘুরতে হয়েছে এই ড্রাগ এডিকশানের জন্য। ১৯৯৯ সালে একবার কোর্টে জাজকে বলেছিল " It's like i have a shotgun in my mouth, and I've got my finger on the trigger. And i like the taste of gunmetal.". ১৯৯৬ সালে একবার এরেস্ট হয়েছিল আগ্নেয়াস্ত্র রাখার কারনে। যখন এটা থেকে প্যারেলে মুক্ত হয়েছিল তার কিছুদিন পরেই আবার ট্রেসপাসিং এর কারনে গ্রেফতার হয়েছিল। তিনবছররের জন্য প্রহিবিশনে ছিল৷ তার মাঝেই আবারো এরেস্ট হয় হ্যাভি ড্রাগের কারনে। এরকম করেই পুরো ৯০ এর দশক কেটেছে তার।

২০০১ সালে ড্রাগের সাথে ৬ বছরের ব্যাটেল শেষে ক্যারিয়ারকে আরেকটু গুছিয়ে নিতে চাইলো এবার। রিহ্যাব শেষ করে নিতে নিতে লেগে গেল আর ৬ বছর। ২০০৭ সাল। প্রথম এক্টিং জব ছিল এল্টন জনের মিউজিক ভিডিও "আই ওয়ান্ট লাভ"। যদিও বড় পর্দায় এসেছে আর আগেই। কিস কিস ব্যাং ব্যাং, জোডিয়াক মুভি গুলো করেছিল ২০০৭ এর আগেই। কিন্তু এটা ছিল ২০০৮ সালে যেখানে সে নিজের ক্যারিয়ার ডিফাইনিং রোল পায়।

একবিংশ শতকের শুরুতে যখন সনি পিকচার্স আর টুইন্টি সেঞ্চুরি ফক্স মার্ফেলের ক্যারেক্টারদের দিয়ে বক্স অফিস কাপাচ্ছিল তখন মার্ভেল নিজেদের স্টুডিও শুরু করে নিজেদের হাতে থাকা সুপারহিরোদের নিয়ে কাজ করার জন্য। মার্ভেলের হাতে অনেক কমিক সুপারহিরো থাকার পরেও তারা ডিসাইড করে তাদের প্রথম প্রডাকশন হবে বি লিস্টেড সুপারহিরো আয়রনম্যানের অরিজিন স্টরি। আর ডিরেক্টর হায়ার করা হয় জন ফ্যাভরোকে। রিউমার ছিল টনি স্টার্কের রোলে আসবে টম ক্রুজ। কিন্তু জন ফ্যাভরোর পছন্দ ছিল রবার্ট ডাউনি জুনিয়র। মার্ভেল স্টুডিও থেকে এটা নিয়ে বিরোধিতাও ছিল ডাউনি জুনিয়রের পাস্ট হিস্ট্রির কারনে। কিন্তু ফ্যাভরোর কথা ছিল এটা তার মুভি সো সেই ভাল জানে। ফান ফ্যাক্ট হচ্ছে রবার্ট ডাউনি জুনিয়র স্কুলে একদিনের জন্য সাসপেন্ড হয়েছিল।  সেটার কারনও ছিল স্কুলে ক্লাস আওয়ারে কমিক বুক পড়া। আর সেটাও ছিল আয়রনম্যান ইস্যু নাম্বার ওয়ান।

মার্চ ২০০৭ সাল থেকে আয়রনম্যান মুভির প্রডাকশন শুরু হয়৷ এবং জুন মাসের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। একবছরেরও কম সময়ে ২০০৮ সালের মে মাসে মুক্তি দেয়া হয় আয়রনম্যান। রেজাল্ট ছিল এক্সিলেন্ট। মুভিটা বক্স অফিসে আয় করে ৫৮৫ ডলার। ডাউনি জুনিয়রের এই মুভির জন্য পেমেন্ট ছিল ৫ লাখ ডলার। কিন্তু মুক্তি পরবর্তীতে প্রফিট শেয়ার বেড়ে যা দাঁড়ায় ২ মিলিয়ন ডলারে। মুভিতে টনি স্টার্ককে পরিচয় করাতে সময় লাগে দুই মিনিটেরও কম। শুরুতেই দেখানো হয় এরোগেন্ট, নার্সেসিস্ট, ওম্যানাইজার টনি স্টার্ক। ব্যাসিক্যালি এক্সোজোরেট ভার্শন অফ রবার্ট ডাউনি জুনিয়র। প্রথম শটেই দেখানো হয় টনি স্টার্কের বা হাতে ধরে স্কচের গ্লাস। যা ইন্ডিকেট করে ফ্যামাস আয়রনম্যান কমিক বুক স্টরি "ডিমন ইন এ বোটল" এর।

ডাউনি জুনিয়রকে এর পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয় নি। আয়রনম্যান-২ রিলিজ হয় ২০১০ সালে। মুভি নিয়ে সমালোচকদের সমালোচনা থাকলেও ডাউনি জুনিয়রের জন্য ছিল শুধুই প্রশংসা। ডাউনি জুনিয়রও সেবার থেকে তার সুপারহিরো ক্যারিয়ারকে সিরিয়াসলি নেয়া শুরু করে। শরীরে প্রটিনের পরিমানে বাড়িয়ে করে নেয় ৩২০০। শুরু করে রেগুলার ইয়োগা ও শিখে নেয় মার্শাল আর্ট। এবং সপ্তাহে ৪ দিন ৯০ মিনিট করে জিম সেশনও শুরু করেন। যা বর্তমানেও বিদ্যমান রয়েছে। তাই ৫৩ বছর বয়সেও পিওর সুপারহিরো লুকে থাকে ডাউনি জুনিয়র৷

সেকেন্ড আয়রনম্যান থেকেই তার সাইনিং মানি ড্রামটিক্যালি বেড়ে যায়। পাঁচ লাখ ডলার এক লাফে হয়ে যায় ১০ মিলিয়ন। আজও রবার্ট ডাউনি জুনিয়রের আপফ্রন্ট মানি মার্ভেল মুভির জন্য টেন মিলিয়ন ডলার৷ কিন্তু প্রফিট শেয়ারে সেটা আকাশ ছুয়ে যায়। আর কন্ট্রাকের বাহিরের মার্ভেল মুভির জন্য তো স্পেশাল ডিল করতে হয়। যেমন ক্যাপ্টেন আমেরিকা সিভিল ওয়ারের জন্য তার আপফ্রন্ট মানি ছিল ৪০ মিলিয়ন ডলার। যা কিনা টাইটেল রোল করা ক্রিস ইভানস থেকেও অনেক বেশি৷ এবং প্রফিট শেয়ার সহ যা দাঁড়ায় ৬৫ মিলিয়ন ডলার।  স্পাইডারম্যান হোমকামিং মুভির ৮ মিনিটেএ এক্সটেন্ডেড ক্যামিওর জন্য নিয়েছে ১৫ মিলিয়ন ডলার। আর গতবছর শেষ হওয়া ইনফিনিটি ওয়ারের জন্য ধারনা করা হয় প্রফিট শেয়ার সহ নিয়েছে ২০০ মিলিয়ন ডলার৷

এ পর্যন্ত রবার্ট ডাউনি জুনিয়র মার্ভেল স্টুডিওর মুভি করেছে  ১০ বছরে ৯ টা। যা থেকে তার আয় ধরা হয় প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার৷ যেখানে তার মোট সম্পত্তির পরিমান প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার৷ আর  এ মাসে অপেক্ষায় থাকা এন্ড গেম তো রয়েছেই। ধারনা করা হচ্ছে এন্ড গেম দিয়েই আরডিজের মার্ভেল ক্যারিয়ার শেষ হতে যাচ্ছে। তবে ভক্তদের জন্য অবশ্য হতাশার কিছুই নেই। কারন আরডিজে ঠিকই রয়ে যাবে বড় পর্দায়৷ ২০১১ সালে শার্লোক হোমস দিয়ে যে প্রমান করেছে হি ইজ ক্যাপাবল অফ  লিড মোর দ্যান ওয়ান ফ্রেঞ্চাইজি। ২০২০ সালে আরডিজে আসছে "দ্যা ভয়েজ অফ ডক্টর ডুলিটল" নিয়ে। আর আসছে "শার্লোক হোমস-৩" আরডিজে যাচ্ছে না কোথাও শুধু আয়রনম্যানে ফিরে আসছে না।

ভবিষ্যতে হয়তো মার্ভেল আবারো আয়রনম্যানকে পর্দায় ফিরিয়ে আনবে। হয়তো আরডিজেকে রিপ্লেস করে দিবে অন্য কেউ। তার জন্য শুভকামনা থাকবে। আর তার সাহসের জন্য বাহবা দিতে হবে। কারন একটা ইম্পোসিবল রোলই যে সে চুজ করতে যাচ্ছে। কারন আরডিজেই টনি স্টার্ক/ আয়রনম্যান.