Know info before watch, but no Spoiler

Once Upon A Time In America (1984) Movie Review

Once Upon A Time In America (1984)

সার্জিও লিওনি! ইতিহাসের অন্যতম সেরা সিনেমা পরিচালকদের একজন। “ডলার'স ট্রিলজি” থেকে সার্জিও লিওনি আত্মপ্রকাশ করে পরিপূর্ণরূপে, যদিও তার নির্মিত প্রথম সিনেমা “They Stole A Tram” মুক্তি পায় ১৯৫৪ সালে। তার পরিচালিত ১১ টি সিনেমার মধ্যে ৫ টি নির্মিত হয়েছে ওয়েস্টার্ন ধারায়, যার প্রতিটি সিনেমা দর্শকনন্দিত হয়েছে, যার ধারা এখনও অব্যাহত রয়েছে। এটি লিওনি'র নির্মিত শেষ সিনেমা।

হ্যারি গ্রে এর “The Hoods” উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত এই সিনেমাটি ১৯৮৪ সালে ইতালিতে মুক্তি পায়। সিনেমাটি ৮৯৪ টি থিয়েটারে মুক্তি দেওয়া হয়। ২০ মিলিয়ন বাজেটে নির্মিত ২২৯ মিনিটের সিনেমাটি বক্স অফিসে মাত্র ৫.৩ মিলিয়ন আয় করতে সক্ষম হয়। বক্স অফিস ফ্লপ্ড! সিনেমাটি নির্মানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২৬ টি লোকেশন ব্যবহার করা হয়। IMDb এর ৭০ নাম্বার পজিশনে থাকা সিনেমাটি এক এবং অদ্বিতীয় সিনেমা হিসেবে অডিয়েন্স এবং ক্রিটিক্সের কাছে বর্তমানে সমাদৃত হয়েছে।

বন্ধুত্ব, প্রেম, বিশ্বাসঘাতকতা এসব নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা। তবে সিনেমায় এর রহস্যময় উপস্থাপন, সে তো কালে-ভদ্রে পরিলক্ষিত হয়। সার্জিও লিওনি এমনটাই করে দেখিয়েছেন এই সিনেমায়। সিনেমাটি Drama, Crime ক্যাটাগরীভুক্ত করা হলেও, এটি মূলত Psychological Drama, Crime Thriller পর্যায়ভুক্ত। কপোলা'র “The Godfather” এর মতো লিওনি'র এই সিনেমাটিও গ্যাংস্টার তৈরীর দৃষ্টান্ত বহন করে। এক অর্থে দুটি সিনেমাকেই তুলনা করা যায় এভাবে যে, প্রতিটি সিনেমা ই  আমেরিকায় তৎকালীন উঠতি পুঁজিবাদ এবং নতুন স্বপ্নে বিভোর হয়ে গড়ে ওঠা সন্ত্রাসবাদকে নির্দেশ করেছে। তবে “The Godfather” থেকে লিওনি'র এই সৃষ্টির সৃজনশীলতা কোথায়?

সিনেমায় প্রধান চরিত্রে ছিলেন রবার্ট ডি নিরো। স্কোরসিজি'র “Taxi Driver” এবং “Raging Bul” এর পরে নিরো এই সিনেমায় তার সেরা অভিনয় প্রদর্শন করেছেন। একইসাথে রহস্যময়, একশন এবং এডাল্ট সিকুয়েন্স গুলোতে তিনি ছিলেন দুর্দান্ত। সহ-অভিনেতা হিসেবে জেমস উডস ছিলেন অতুলনীয়। এছাড়া এলিজাবেথ ম্যাকগভার্ন এবং জো পেস্কি তাদের অভিনয়ে ছিলেন মনোমুগ্ধকর।

ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, সাউন্ড কম্বিনেশন, একশন, সিনেমাটোগ্রাফি, কস্টিউম, এডাল্ট সিন, স্ক্রিনপ্লে এসবের এক অনন্য মিশ্রন ঘটিয়েছেন লিওনি। বরাবরের মতোই স্ক্রিনে চোখ লেগে থাকার জন্য সৃজনশীল এই স্রষ্টা তার সৃষ্টিকে করেছেন সাফল্যমন্ডিত। প্রায় ৪ ঘন্টার এই মুভিটি আপনাকে পরিপূর্ণ তৃপ্তি দিতে পারবে এতটুকু বলাই যায়।

Plot Summary:- অন্ধকার কক্ষ, একলা রমনী। হঠাৎ আলোর আবির্ভাব, ক্লান্ত রমনীর মুখাবয়ব। হঠাৎ তিন আগন্তুকের প্রবেশ, প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে হত্যা। টেলিফোনের উৎকট শব্দ! ঘুম ভাঙে নুডলস এর। বৃষ্টিস্নাত অবস্থায় পুলিশের সাইরেন, ৩ টি লাশ। টেলিফোন বেজেই চলছে। কফিনাকৃতি বিশাল কেক পরিবহন করছে চারজন। কফিনের গায়ে লেখা “Prohibition”. সময়কাল ১৯৩৩। হঠাৎ করেই বয়স্ক নুডলস অবতীর্ন হন। ধাবিত হন তার নিজস্ব পথে। হঠাৎ করেই আবার পিছুটান, নুডলস ফিরে যায় তার শৈশবে। ছোট নুডলস এবং তার সঙ্গীদের অপরাধের চিত্র! নানা উপায়ে অর্থ সংগ্রহ করে ছোট গ্যাংস্টার গ্রুপ।

অত্যন্ত দুঃখবোধ হচ্ছে এটা ভেবে যে, আসলে সিনেমার প্লট তুলে ধরার সামর্থ্য আমার নেই। বিশাল দৈর্ঘ্যের এই সিনেমার নির্মানে ৪ টি সময়কাল তুলে ধরা হয়েছে। অগ্র-পশ্চাৎ-বর্তমান নিয়ে তুলে ধরা স্ক্রিনপ্লে যে কাউকে চমকে দিতে প্রস্তুত। বস্তুত “Once Upon A Time In America” সিনেমাটির তুলনা চলে শুধুমাত্র লিওনির অন্যান্য সৃষ্টির সাথে। লিওনি তার সততা, নিষ্ঠা এবং তীব্র আবেগ মিশ্রিত করেছেন চলচিত্রটি নির্মানে। ক্যামেরার অ্যাংগেল মাঝে মাঝে ইতালিয়ান মেলোড্রামা ভঙ্গির। যৌনতার দৃশ্যগুলি যেনো কৈশোরের আবেগভরা দৃষ্টি থেকে তৈরী, সেগুলো প্রচন্ড অসহ্যনীয়। তবে শেষে এসে সিনেমাটি তৈরী করেছে এক সাইকোলজিক্যাল প্রেসার। শেষ চমকের জন্য এটাকে মাস্টারপিস বললেও কম হয়ে যায়।

সিনেমাটি আপনি দেখুন কিংবা নাই-বা দেখুন, কিন্তু এটা আপনি অবশ্যই স্বীকার করতে বাধ্য হবেন যে, এমন সিনেমা দ্বিতীয়টি তৈরী করা সম্ভব নয়।