Sacred অর্থ পবিত্র, পূন্য, পূত, ধার্মিক, ধর্ম সম্পর্কীয়।
তবে আমরা কী বলতে পারি 'পবিত্র গেমস'?
না আক্ষরিক অর্থে বলা যায়না, সম্ভবত ভাবানুবাদে বুঝিয়েছি 'ধর্ম নিয়ে খেলা' জাতিয় কিছু অথবা ধর্ম সম্বন্ধিত কিছু হবে।
কারণ পুরো সিরিজে গডফাদার গাইতোণ্ডে ওরফে গণেশ নিজেকে ভগবান বলেছিল বারবার এছাড়াও হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যকার কীভাবে দাঙ্গা-ফাসাদ সৃষ্টি করে মানুষ নিজস্ব ফায়দা লুটে সেসবও দেখানো হয়েছে।
যদি আক্ষরিক অর্থে পবিত্র গেমস ভাবি তবে সবচে বড় ভুল হবে, এটিই আমার ধারণা!
দুনিয়ার ভয়ংকর গালাগালি, এবং ন্যুড দৃশ্যে ভরা পুরো পর্বগুলোতে।
সিরিজ দেখে যেকেউ অশ্লীলতায় আর গালিবাজে নওয়াজ উদ্দিন সিদ্দিকী কে (গাইতোণ্ডে) নোবেল দিতে একপায়ে খাড়া হয়ে আবদার রাখবে যদিনা গালাগালির উপর কোনো পিএইচডি ডিগ্রি পায় তবে সত্যিই সে দাবিদার।
সাইফ আলি খান এত ভালো অভিনেতা, নবাব পৌতদির খান বংশের পোলা, অথচ তার মুখেও বেশ কবার আনসেন্সরড গালি শুনেছি।
রাধিকা অপ্তে তো এমনিতেই নারীবাদী টাইপের তার মুখে আগেও শুনেছি, সে সাহসী দৃশ্যে এক্সপার্ট তাই সেসব বড় করে দেখছিনা। যদিও এ সিরিজে রয় এজেন্টের সিনিয়র অফিসার তিনি তাই ভালোই অভিনয় করেছে।
সিজন একের সবগুলো পর্ব মিলে ৬ ঘন্টা ৩১ মি. ইনক্লুডিং এড। আমার একদিন ডিউটি এবসেন্ট দিতে হয়েছিল দেখতে দেখতে, আমি পুরাই আশ্চর্য হয়েছি প্রথমবার দেখতে বসে কারণ ভারতীয় প্রথম ওয়েব সিরিজ এটি, এবং এর আগে কোনো ছবিতেও এত গালাগালি আর এরকম ন্যুড দৃশ্য খুব কমই দেখেছি অন্তত, বলিউডের।
যদিও চরিত্র মেলাতে অথবা নেটফ্লিক্সের (গ্লোবাল ফ্লার্টফরম)সিরিজ হওয়ায় সেন্সর ছাড়পত্র সহজেই পেয়েছে।
মদ্যপান, ধূমপান করার সময় কোনোপ্রকার এওয়ারনেস সাইন দেয়নি, শুনেছি এজন্য নাকি মামলা খেয়েছে। সোনিয়া গান্ধী ও রাজীব গান্ধী কে (২ বার) কটাক্ষপাত করা হয়েছে এ নিয়েও বেশ সমালচোনায় পড়েছে সিরিজটা।
কাহিনী সংক্ষেপঃ সাইফ আলি খান (সারতাজ সিং) একজন সৎ ও আদর্শ পুলিশ অফিসার, যে তার সিনিয়র অফিসারদের উপর নারাজ, আবার করারও কিছু নেই সাধারণ পোস্টে থাকার জন্যে।
একদিন মিশনে তার বস ইনকাউন্টার করে এক নিষ্পাপ মুসলিম ছেলেকে গুলি করে মেরে ফেলে।
এতে সে হতাশ হয়ে পড়ে, কারণ তাকে বলতে বলা হয় সেলফ ডিপেন্ড করতে গিয়ে গুলি করেছে!
সে ভাবে সত্য ঘটনা বলে দিবে কিন্তু বসের উপর তো আর পারা যায়না, এজন্য দুর্দশাগ্রস্ত হয়।
হঠাৎ তার কাছে ফোন আসে গণেশ গাইতোণ্ডের (মুম্বাইয়ের ১৫ বছরের পলাতক ডন) এবং সে তাকে আল্টিমেটাম দেয় ২৫ দিনের মাঝে এ শহর শেষ করে দিবে। যেহেতু সে সৎ ও নিষ্ঠাবান পুলিশ তাই শহরকে বাঁচাতে বলে তাকে, যদি সে পারে! (ক্ষমতা থাকলে রুখতে)
দুজনের কল ট্র্যাপ করে শুনে ফেলে রয় এজেন্ট এ কর্মরত অফিসার অঞ্জলি মাথুর (রাধিকা অপ্তে)
প্রথম দিকে সারতাজ সিং গাইতোণ্ডে কে অবিশ্বাস করলেও তারপর যখন পুরনো ফাইল ঘেটে দেখতে পায় তার নামের 'মামলা' তখনি বিশ্বাস করে তার কথা, এবং চিন্তিত হয়ে সিনসিয়ার হয়ে উঠে।
এবং পঁচিশ দিনে কী হবে, কীভাবে কি হয়েছে পুরো সিরিজ সে কাহিনী নিয়েই এগিয়ে যায়।
কীভাবে একজন সাধারণ ব্রাহ্মনের ছেলে হয়ে ওঠে মুম্বাইয়ের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ডন (গাইতোণ্ডে) পরিণত হয়েছে সে চিত্রায়ন দেখাতে থাকে, পঁচিশ দিনে ঘটা সম্পূর্ণ কাহিনীতে।
যদিও এ সিজনে ৮ পর্বে এমন ভাবে দ্য এন্ড টেনেছে যা দর্শক কে অতৃপ্ত রেখেছে অনুরাগ ক্যাশপ (পরিচালক) দ্বিতীয় সিরিজ দেখা ছাড়া কিছুই বুঝা যাবেনা, আত্মতৃপ্তিও পাওয়া যাবেনা!
পুরো সিরিজ বিক্রম চন্দ্র নামের একজন লেখকের "sacred games" উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি।
মূলত ধর্ম নিয়ে খেলা, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি, ধর্মকে প্যাটেন্ট, ট্রেডমার্ক দিয়ে কীভাবে মানুষ নিজস্ব সর্বার্থসিদ্ধি উদ্ধার করছে পৃথিবীজুড়ে সেসবের আলোচনায় বেশি, বাস্তবতার মিশেল।
নওয়াজ উদ্দিন সিদ্দিকী একমাত্র অভিনেতা যার মুখেই গালিগুলোও হাস্যরসাত্মক মনে হয়েছে এবং চিত্রনাট্য ও তার চরিত্র পারফেক্ট কম্বিনেশন আমার ধারণা অন্যকোন নায়কের আদৌ সম্ভবপর হত না এ চরিত্র।