Know info before watch, but no Spoiler

Mission Impossible : Fallout Movie Review


স্পাই-একশন জনরার সিরিজগুলোর মধ্যে অন্যতম মিশন ইম্পসিবল।এ জনরার অন্যান্য সিরিজ থেকে এ সিরিজ অনেকাংশেই ভিন্ন-তা সেটা এর সেট আপ,গিমিক,চরিত্র,একশন দেখলেই বুঝা যায়। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে এর প্রধান চরিত্রে একই অভিনেতা কাজ করে চলেছেন এর জন্মলগ্ন থেকেই আর আমরাও (দর্শক) তাকে গ্রহণ করে নিয়েছি সাদরে, পরিচালনায়ও ভিন্ন ভিন্ন পরিচালক কাজ করেছেন এ সিরিজের ৫ নম্বর সিনেমা পর্যন্ত, কোন পর্বের কাহিনীর সাথে অন্য পর্বের তেমন কোন কানেকশন নেই। ১৯৯৬ এ শুরু হওয়া এ মুভি সিরিজের ৬ নম্বর পর্ব ফলআউট মুক্তি পায় এ বছর। অনেকগুলো ব্যতিক্রমের জন্ম দেয়া এ মুভিতে অভিনয়ে ছিলেন টম ক্রুজ, অ্যালেক বোল্ডউইন, ভিং রাইমস, রেবেকা ফারগুসন, সাইমন পেগ, মিশেল মনাহান, শন হ্যারিসের সাথে সিরিজের এ পর্বে যুক্ত হয়েছেন ভ্যানেসা কারবি, এঞ্জেলা বেসেট আর হ্যানরি কাভিল।

ব্যতিক্রমের কথার বিষয়ে বলছিলাম, এটি এ ফ্রাঞ্চাইজির একমাত্র মুভি যার পরিচালক এর আগের পর্ব-এর পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন,স্টিভেন ম্যাকুয়ারি রোগ নেশনের পর আবার ফিরেছেন ফলআউট এর জাহাজ সামলাতে,আরো কিছু ব্যতিক্রমের ভিতর আছে-এটার সাথে সিরিজের অন্যান্য পর্বের  যোগাযোগ আছে আর তা ভালমতোই,সবচেয়ে সরাসরি যদি বলতে হয় তাহলে বলা যায়,৫ নম্বর সিনেমার সিকুইয়েল হচ্ছে এ সিনেমা। এ বছরের অন্যতম সেরা’র তকমা পাওয়া ১৭৮ মিলিয়নে বানানো এ মুভি দেখেছিলাম বেশকিছুদিন আগে সিনেপ্লেক্স-এ, কেমন লাগল আমার আসেন দেখি...

এবারের মিশনে দেখা যায় প্লুটোনিয়াম বাহী তিনটি বোমা উদ্ধারের দায়িত্ব পড়ে ইথানের (ক্রুজ) দলের উপর কিন্তু বার্লিনের সেই মিশনে ব্যর্থ হয় তার দল আর সেই বোমাগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিতে ঊঠে পড়ে লাগে এপোস্টল নামের এক সংগঠন যারা মূলত বিগড়ে যাওয়া আর বিপথে পরিচালিত সাবেক আইএমএফ এজেন্টদের নিয়ে গঠিত। এ দলের অন্যতম সদস্য হচ্ছে জন লারক আর মূলত সেই এ বোমাগুলো এপোস্টোলের কব্জায় নেয়ার জন্য কাজ করছে, কিন্তু লারকের কোন তথ্য,ছবি সিআইএ,আইএমএফ, এম আই সিক্স কারো কাছেই নেই। কে এই লারক? সিআইএ-এ মিশনের ব্যর্থতার জন্য আইএমএফকে দায়ী করে এবং এ বোমাগুলো উদ্ধারের মিশনে তথা আইএমএফ এর উপর নজরদারী করতে তাদের এক এজেন্ট অগাস্ট ওয়াকারকে (কাভিল) নিযুক্ত করে। পরিস্থিতির গুরুত্ব কয়েকগুণ জটিল হয়ে যায় যখন জানা যায় এ সবের পিছনে সন্ত্রাসী দল সিন্ডিকেট-এর নেতা সাবেক এজেন্ট সলোমান লেনের (হ্যারিস) হাত রয়েছে।কিন্তু সে কিভাবে এগুলো করবে কেননা সে তো এখন বন্দী। আর এসবের মাঝে এম আই সিক্স এজেন্ট এলসা ফস্ট (ফারগুসন) কি করছে? সে কার হয়ে কাজ করছে? ইথান কাকে বিশ্বাস করবে?

সবকিছুতেই ব্যপকতা ছিল এ মুভিতে। আগের পর্ব গূলোকে ছাড়িয়ে যাওয়ার অদম্য বাসনা বা জেদ কাজ করেছে এর নির্মাতা গোষ্ঠীর।তা এর প্রতিটা ফ্রেমেই বুঝা যায়। কি ক্যামেরার কাজ, সেট, সেট-পিছ, কি এডিটিং, সাউন্ড ডিজাইন, ব্যাকগ্রাঊণ্ড স্কোর, কি স্টান্ট, কি অভিনয়, কি পরিচালনা সব কিছুই আপ্ট। এ সিনেমা শুধূ দেখার জন্য না উপভোগেরও আর সিনেমা মেকার বা ভবিষ্যৎ মেকার যারা মূলত একশন সিনেমা বানাবেন তাদের জন্য এটা দেখা একেবারেই মাস্ট।একের পর এক টুইস্ট আর রোমহর্ষক সব সেট-পিছের সমাহার বলা যায় এ সিনেমাকে। পরিচালনায় ম্যাকুয়ারি অনবদ্য, তিনি নিজেকে ছাড়িয়ে গেছেন। অভিনয়ে সবাই ভাল করেছেন, বিশেষ করে ৫৬ বছরের তরুণ টম ক্রুজ। তিনি সত্যিই মানুষ না অন্য কিছু। এ সিনেমার জন্য তিনি যা করেছেন তা আসলে ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়-প্যারিসের ব্যস্ত সড়কে দ্রুতগতিতে মোটরবাইক চালনা, এক ভবন থেকে আরেক ভবনে লাফিয়ে চলা আর সেটা করতে গিয়ে পা ভাঙ্গা, হেলিকপ্টার চালনা শিখা আর সেটা সিনেমায় ব্যবহার, হেলো জাম্প...টম ক্রুজ আসলে মানুষ না এলিয়েন...

কাভিল এ সিনেমার বড় সারপ্রাইজ...এ সিনেমার হাইলাইট অনেক কিছুই তবে আমার কাছে যদি কিছু থাকে তবে তা হচ্ছে এর বাথরুম ফাইট সিন। যেখানে ইনি অনবদ্য। অভিনয়ে অন্যরাও ভাল...