Know info before watch, but no Spoiler

Ratsasan (2018) Movie Review || মুভি রিভিউ

Ratsasan (2018)

আরুণ কুমার (Vishnu  Vishal) থাকে একজন প্যাশনেট মুভি মেকার, যদিও তার একটা স্ক্রিপ্টও কোন প্রযোজকের মন কেড়ে নিতে পারে নি। বোন, পুলিশ অফিসার দুলাভাই ও ছোট একটা ভাগ্নি আছে তার। প্রত্যেকটা ডিরেক্টরেরই একটা নিজস্ব স্টাইল থাকে, এখানে অরুণ কুমারেরও একটি নির্দিষ্ট গল্পের মুভি বানানোর ইচ্ছা প্রবল থাকে, সেটি হল সিরিয়াল কিলিং! তার রুমের দেয়াল জুড়ে শুধু ভারতই নয়, প্রায় পুরো বিশ্বের নানান সময়ের আলোচিত সিরিয়াল কিলারদের নিয়ে প্রকাশিত পেপার/ম্যাগাজিন/বুক কাটিং দিয়ে সাঁটা থাকে। দুর্ভাগ্যক্রমে যখন তার মুভি মেকিং কোন ভাবেই আলোর দিক দেখছিল না, তখন তার দুলাভাই তাকে এক প্রকার অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাকে পুলিশের এস আই পদে জয়েন করিয়ে দেয়।
এরপর একের পর এক হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে মুভির কাহিনী এগিয়ে চলে। প্রত্যেকবার স্কুলের কোন না কোন মেয়ে অপহৃত হতে থাকে। ঠিক তার দুই দিন পর তাদের লাশ পাওয়া যায় বিভিন্ন জায়গায়, খুবই বিকৃত ভাবে মেয়েগুলো কে হত্যা করা হত, এবং ইন্টারেস্টিংলি সবার বাড়ির আশেপাশেই একটা গিফট বক্স থাকত, যেখানে থাকত একটি পুতুলের কাটা মাথা এবং সে মাথাগুলো বিকৃত ভাবে কাটা। আশ্চর্যের ব্যপার হল, লাশগুলোর মুখমন্ডল গুলোও ঠিক সেইভাবেই কাটা থাকত। এভাবে চলতে চলতে ৪ নম্বর ভিক্টিম হয় অরুণের ভাগ্নি। যথারীতি তার লাশও পাওয়া যায় তার দুলাভাইয়ের গাড়ির পিছনের বক্সে। এই সময়েই বিভিন্ন ক্লু মিলিয়ে দেখা দেখা যায় যে যে মেয়েগুলো হত্যা করা হয়েছে তাদের প্রত্যেকেরই স্কুলে ঠিক তার দুই দিন আগে কোন না কোন ফাংশন অনুষ্ঠিত হয়েছে, এবং সেখানে একজন মহিলা (!) ম্যাজিশিয়ান ম্যাজিক পারফর্ম করেছে, এই ক্লু ধরে এগিয়ে যেতে যেতেই এক সময়ে খুনী ধরা পড়ে। কিন্তু দেখা যায় খুনী একজন পুরুষ, যে কি না তার মায়ের বেশ ধরেই একের পর এক খুন করে চলে। যদিও বিশ্বের তাবদ সিরিয়াল কিলিং এর মতই এখানেও রয়েছে এক হৃদয় বিদারক ঘটনা, যেটা যে কারোর কাছেই বেশ কষ্টের মনে হতে পারে।

এবার আসি এই ছবির বেশ কিছু জায়গায়, যেখানে দর্শক হিসেবে আমার কিছু অসঙ্গতি লেগেছে।

১। হয়ত প্রত্যেক সিরিয়াল কিলারেরই কিছু নিজস্ব স্টাইল থেকে থাকে, যার ফলে তাদের কিলিং এর ধরন প্রায় একই থাকে, কিন্তু তারা এখানে কিলার প্রত্যেকবারের ফাংশনের ম্যাজিকে এসিস্ট করা মেয়েগুলোকেই কেন বেছে নিলেন, এতে করে তার ধরা পড়াটা বেশ সহজ ছিল, এত পেঁচানোরও দরকার ছিল না। এখন অনেকেই সিনেমাতে যেভাবে উপস্থিত করা হয়েছে বিষয়টা তার সাথে সুর মিলিয়ে বলতে পারেন, সেই মেয়েটিকে প্রলুব্ধ করা সহজ ছিল। কিন্তু বিষয়টি তেমন না, যেই বয়সী মেয়েদের এখানে দেখানো হয়েছে, তারা ম্যাজিকে এসিস্ট না করলেও শুধু ম্যাজিক দেখার ফলেই পরবর্তীতে সেই খুনীর প্ররোচনার ফাঁদে পড়ত।

২। হরমোনাল প্রবলেমের কারণে যে কিশোরটি ইম্পোটেন্ট ছিল, সেই লোকটি বড় হয়ে একজন পুলিশ অফিসারের সাথে যেভাবে পাল্লা দিয়ে ফাইট করে গেল, সেটা হাস্যকর বললেও কম বলা হয়ে যাবে। যদিও অনেকেই বলবে মুভিটিতে একটু বাড়তি উত্তেজনা যোগ করাই ছিল এত উদ্দেশ্য, তাহলে মেনে নিতে আপত্তি নেই যে এর দরকার ছিল।

ভালো লেগেছে যে যে বিষয়ঃ

১। ঠিক এই ধরনের মুভি ইন্ডিয়ান সিনেমাকে অনেক উপরে তুলতে সাহায্য করবে। কাহিনী, অভিনয় সর্বোপরি সাস্পেন্সে ভরপুর একটি সিনেমা, মানতেই হবে।

২। শেষ মেয়েটি কে দেখানো হয়েছে ক্লাস টেন টপার, কিন্তু সে ব্যাকবেঞ্চার, এটা খুবই ভাল লেগেছে। শুধু সামনের পোলাপানই ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার কিংবা সায়েন্টিস্ট হবে, এটা ভাবা ঠিক না।

৩। এটা আসলে ভাল লাগার বিষয় না, কিন্তু মনে দাগ কেটেছে, সেটা হল অরুণের ভাগ্নির লাশের ব্যাপারটা যেভাবে ওর বোনের কাছে লুকিয়ে মর্গে নিয়ে যাওয়া হল, সেই ৭-৮ মিনিট আমি জীবনের ভুলব না। অসাধারণ অভিনয়, সিনেমাটোগ্রাফি এবং পরিচালকের পান্ডিত্য আমাকে মুগ্ধ করেছে।

সব শেষে, এ ধরনের সিনেমা আরও হওয়া উচিৎ, এতে করে আমাদের মত সিনেমাভোজীদের ক্ষুধা আরও অনেক বেড়ে যাবে, সাথে বাড়বে সুস্থ ধারার বিনোদনের প্রতিযোগিতা।
© Movie Review Bd