Know info before watch, but no Spoiler

Latest Movies

Today Best choice
check all movies now playing

হ্যারি পটার এর জাদুর স্কুল সমুহের বর্ননা



আমরা একসময় জানতাম হগওয়ার্টস নামক ম্যাজিক স্কুলের কথা...
পার্ট ফোর থেকে আরো 2 টা ম্যাজিক স্কুলের নাম
জানা যায় যেগুলা ইউরোপের মধ্যে আছে।
কিন্তু জে. কে. রাওলিং শুধু ইউরোপ নয়, পৃথিবী জুড়ে
১১ টি প্রধান ম্যাজিক স্কুলের অবস্থানের কথা বলেছেন
এবং তার সাথে ছোট বড় আরো অনেক স্কুল আছে।

হগওয়ার্টস ব্যাতিত বাকি স্কুলের কথাই আজ বলব।


১) BEAUXBATONS : ১২৯০ সালে এই স্কুল ফ্রান্সে প্রতিষ্ঠিত হয়। অধিকতর ফ্রান্সের ছেলে মেয়েরা পড়লেও বেলজিয়াম, স্পেন, পর্তুগাল, নেদারল্যান্ডসের
শিক্ষার্থীরা আসে৷ এদের পোশাক নীল সিল্কের কাপড়ে
তৈরী। সৌন্দর্যের দিক দিয়ে এটি হগওয়ার্টস কেও হার
মানায়। চারিদিক পাহাড় ও বাগানে ঘেড়া এই স্কুল।
এর ঝড়নার পানি মানুষের রোগমুক্তি ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। হ্যারি পটার পার্ট ৪ এই স্কুল ট্রাই উইজার্ড কম্পটিশনে আসে।  এরা যানবাহনের জন্য উড়ন্ত ঘোড়া
ব্যাবহার করে।

যেকোনো প্রতিযোগিতায় এরা ৬২ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে যেখানে হগওয়ার্টস ৬৩ বার।

"নিকোলাস ফ্লামেল" যিনি ফিলোসফার স্টোনের আবিষ্কারক।  তিনি এই স্কুলের ছাত্র ছিলেন।

২) DURMSTRANG INSTITUTE : ইউরোপের আর একটি স্কুল। যেখানে অধিকতর বুলগেরিয়ান স্টুডেন্ট
পড়ে। ১২৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এটি। ডার্ক আর্ট ম্যাজিক এর জন্য বিখ্যাত এই স্কুল।

মাগলবর্ন এই স্কুলে পড়তে পারত না শুরুর দিকে কিন্তু
পরবর্তীতে মাগলরা সেই সুযোগ পায়।
ভিক্টর ক্রাম ( পার্ট ৪ দেখানো হয়েছে) এই স্কুলের ছাত্র।

বরফে আচ্ছাদিত থাকে এই স্কুল তাই সেখানকার পোশাক
খুব মোটা হয়।

ডার্ক ম্যাজিককে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া স্কুল এটি।
যেখান থেকে " গ্রিন্ডেলওয়াল্ড " পড়াশোনা করেছে।
এবং ১৮৯০ সালের দিক ভয়ানক ডার্ক ম্যাজিক করার
কারণে তাকে স্কুল থেকে বের করে দেয়া হয়।

৩) ILVERMORNY : "ফ্যান্টাস্টিক বিস্টস" মুভিতে এই স্কুলের নাম শোনা যায়। যেখান থেকে "কুইনি ও টিনা গোল্ডস্টেইন "পাশ করা শিক্ষার্থী ছিল।
এটি আমেরিকায় অবস্থিত। হগওয়ার্টস এর মত এদের
৪ টি হাউজ আছে। " Thunderbird, Wampus, PukwudG, Horned Sarpent."

স্কুলের স্টুডেন্টদের হাউজ সিলেকশন "গর্ডিয়ান নট"
নামক যায়গায় হয় যেটা এনট্রানস হলের সামনেই
অবস্থিত।  হাউজের প্রতীক তাদের স্টুডেন্ট চুজ করে
নেয়। ১৮০০ শতাব্দীতে এটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়
এবং ১৯০০ শতাব্দীতে এটিকে হগওয়ার্টসের সমান
জনপ্রিয় মানা হয়।

ইলভারমরনি বাহির থেকে সাধারণ মানুষের চোখে
মেঘের মত মনে হয়।
হগওয়ার্টস ব্যাতিত বাকি ম্যাজিক স্কুলের বর্ণনার
২য় পার্ট এটি। প্রথম টির লিংক পোস্টের শেষে দেয়া।

৪) CASTELOBRUXO : এটি ব্রাজিলের আমাজন রেইন ফরেস্টে অবস্থিত। লাতিন আমেরিকার স্টুডেন্ট
এখানে পড়তে আসে। এটি দেখতে পুরোনো মন্দিরের মত।
"ক্যাসেলোব্রোসো" হগওয়ার্টসের মতই পুরোনো স্কুল।
"কাইপোরা" নামক ছোটো জীব এটার দেখাশোনা করে।
রনের বড়ভাই বিল উইজলির পেনফ্রেন্ড এই স্কুলে পড়ত। আর্থিক অভাব থাকায় "বিল উইজলি" ব্রাজিলে
গিয়ে সেখানে পড়তে পারে নি।

এই স্কুলের শিক্ষার্থীদের পোশাক গাঢ় সবুজ বর্ণের হয়
এবং এরা "হার্বালোজি ও ম্যাজিক্যাল ক্রিয়েচার সাবজেক্ট " এ অনেক পারদর্শী হয়।
ক্যাসেলোব্রোসো একটি পর্তুগিজ শব্দ। যার অর্থ হলো
"জাদুর মহল।"

৫) MAHUTOKORO : এটির অবস্থান জাপানে।
"মাহুতোকরো" একটি জাপানিজ শব্দ যার অর্থ হলো
"জাদুর স্থান।"
এটিই হচ্ছে সবচেয়ে পুরোনো জাদুর স্কুল এবং মজার
তথ্য হলো " কিডিচ" খেলার উৎপত্তি এখানেই।
সবচেয়ে কম স্টুডেন্ট নিয়ে গড়া এই স্কুল জাপানের
আগ্নেয়গিরি পাহাড়ের উপর অবস্থিত যা সাধারন চোখে
জাপানের মন্দিরের মত লাগে।
৭ বছর বয়সেই এদের স্টুডেন্ট সিলেকশন হয়ে যায়।
যদিও বা ১১ বছর বয়স থেকে ক্লাস শুরু করে তারা।

এদের পোশাক প্রথম অবস্থায় গোলাপি কালার এবং
অভিজ্ঞতার সাথে সাথে সোনালিতে পরিনত হয়।
কোনো স্টুডেন্ট রুল ব্রেক করলে তার কাপড় সাথে
সাথে সাদা কালার ধারণ করে এবং তাকে বের করে দেয়া হয়।
নিয়ম কানুন প্রয়োগের জন্য এরা সবখানেই সমাদৃত।

৬) UGADOU : পশ্চিম উগান্ডার "মাউন্টেন অব দ্যা মুন"
এর উপর অবস্থিত। বলতে গেলে সবচেয়ে বড় এবং
বেশি স্টুডেন্ট নিয়ে গঠিত এই স্কুল যা হগওয়ার্টস থেকে
বেশি পুরোনো। এতটাই উপরে অবস্থিত য দেখলে মনে
হয় মেঘে ভাসমান অবস্থায় আছে।
এরা ট্রান্সফিগারেশন, এলকেমি, এস্ট্রোনমি তে পারদর্শী।

স্টুডেন্ট বাছাই প্রক্রিয়া এখানে "ড্রিম মেসেনজার"
মাধ্যমে ঘটে। অর্থাৎ স্বপ্নে বার্তা আসে এবং স্টুডেন্টদের
হাতে একটা পাথর দেয়া হয়। যার মাধ্যমে তারা বুঝতে
পারে যে তাদের স্কুলে পড়ার যোগ্যতা আছে।

এরা নিজের হাত বা আংগুল দিয়ে জাদু করে।

৭) KOLDOVSTORETZ : এর অবস্থান রাশিয়ায়।
এই স্কুল সম্পর্কে রাইটার এখনো কিছু তথ্য প্রকাশ করেনি।

হগওয়ার্টস সহ এই ছিল ৮ টি স্কুল যার তথ্য প্রকাশ
করা হয়েছে। ওয়ার্ল্ডফেমাস ১১ টি স্কুল এর মধ্যে এখনো ৩ টি স্কুল কোথায় আছে বা কেমন রাইটার
প্রকাশ করে নি।

নেক্সট "হোগওয়ার্টস" স্কুলের উৎপত্তি আর যেই ৪ জন
তৈরী করেছেন তাদের নিয়ে আলোচনা করব।

হ্যারি পটার এন্ড দ্যা চেম্বার অফ সিক্রেটস রিভিউ


প্রথম একটি রোমাঞ্চকর বছরের শেষে ডার্সলি ফ্যামিলিতে ছুটি কাটানো হ্যারি তার বাবা মায়ের ছবি দেখছে, এই দৃশ্যের মাধ্যমে ছবি শুরু হয়।  নিচতলায় ডার্সলি পরিবারে উৎসব উৎসব আমেজ। হ্যারিকে বলা হয়েছে উপরে যেন চুপ করে বসে থাকে কোন প্রকার শব্দ না হয়, ভার্ণনের ক্লাইন্ট ও তার স্ত্রী এসব পছন্দ করেন না, হ্যারির ও এসব ঘাটানোর ইচ্ছে নেই, কিন্তু ঝামেলা তার পিছু ছাড়বার নয়, হ্যারির রুমে এসে হাজির হয় হাউজ এলফ ডবি,  হ্যারিকে হাতে পায়ে ধরে সাবধান করে এই বছর হগওয়ার্টসে ফিরে না যেতে, কারন এই বছর ভয়ংকর সব ঘটনা ঘটবে হগওয়ার্টসে, যার প্লট সাজানো হয়ে গেছে, হ্যারি কোন ভাবেই ডবির কথা কানে তুলেনা, তাই ডবি হ্যারিকে আটকানোর জন্য আংকেল ভার্ণনের গেস্টের মাথায় আস্ত কেক ফেলে দেয় আর উধাও হয়ে যায় নাম পরে হ্যারির, আর হ্যারি গৃহবন্দী হয়।
ছুটি শেষ হয়ে আসছে, হ্যারির কোন খবর না পেয়ে তার বন্ধু রন উড়ন্ত গাড়ী নিয়ে আসে রেসকিউ মিশনে, ভার্ণনের বাড়ির জানালা ভেঙে উদ্ধার করে হ্যারিকে প্রথমবারের মতো নিয়ে যায় উইজলি ফ্যামিলির বাড়ি "দ্যা ব্যারো" তে। হ্যারি প্রথমবারের মতো কোন জাদুকরী বাড়িতে গিয়ে রীতিমতো চমকিত হয়,ঘরের সব কাজ জাদুর মাধ্যমে নিজে নিজে হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সে পুলকিত ভাবটা বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনা হ্যারি, মলি এসে তার ছেলেদের বকাঝকা শুরু করে গাড়ী চুরি করার জন্য, উপর থেকে জিনি উইজলি এসে হ্যারিকে দেখে লজ্জা পেয়ে আবার দৌড়ে পালায়। এমন সময় আবির্ভাব ঘটে আর্থার উইজলির, রনের, জর্জ,ফ্রেড,জিনি উইজিলির বাবা তারা সকলে মিলে বই কেনার জন্য ফ্লু পাউডার দিয়ে ডায়গন আ্যলিতে যায়। কিন্তু হ্যারি আগে ফ্লু পাউডার ব্যাবহার না করায় ভুল করে নকটার্ন আ্যলির একটি দোকানে চলে যায়, সেখানে দেখতে পায় লুসিয়াস ম্যালফয় আর তার ছেলে ড্র‍্যাকো ম্যালফয় কিছু বিক্র‍য় করতে এসেছে।হ্যারি সেখান থেকে এসে রন আর হারময়নির দেখা পায়, তারা সকলে মিলে বিখ্যাত লেখক গিল্ডরয় লকহার্টের দোকানে যায়। হ্যারিকে গিল্ডরয় লকহার্ট চিনতে পারে আর একসেট বই উপহার দেয়। এটা দেখে ম্যালফয় ফ্যামিলির সাথে হ্যারি আর উইজলি ফ্যামিলর দ্বন্দ্ব বাঁধে।
ঝামেলা যেন হ্যারির পিছু ছাড়েইনা, হ্যারি আর রন হগওয়ার্টস এক্সপ্রেস মিস করে বসে, তারা তাদের উড়ন্ত গাড়ি নিয়ে রওনা হয় হগওয়ার্টসের দিকে। গাড়ি তাদের হগওয়ার্টসে পৌছে দেয় ঠিকি কিন্তু তাদের নামিয়ে নিয়ে নিজে নিজে  ডার্ক ফরেস্টের দিকে চলে যায়। যার বদৌলতে রন তার মায়ের থেকে হাউলার পায়।
প্রফেসর কুইরেল মারা যাবার পর ডার্ক আর্টস ক্লাসের টিচার হয় গিল্ডরয় লকহার্ট! যে কিনা নিজের সুনাম করতেই ব্যাস্ত। অন্য দিকে হ্যারি দেয়ালের ভেতর থেকে কোন অদ্ভুত শব্দ শুনতে পায় যা শুধু একটাই কথা বলে "Kill"
হ্যারি দৌড়ে করিডোরে যায় সেখানে দেখে ফিলচের বেড়াল পোট্রিফাইড হয়ে পরে আছে, আর পাশে লিখা "চেম্বার অফ সিক্রেট খুলে গেছে শত্রুদের উত্তরসূরিরা ভয় পাও"।  পাশ দিয়ে দেখা যায় কিছু মাকড়শা ভবন থেকে বের হয়ে যাচ্ছে।
চেম্বার অফ সিক্রেটস আসলে কি তা প্রফেসর ম্যাকগোনাগল এর কাছে জানতে চায় হ্যারি, উনি উত্তর দেয় হগওয়ার্টসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সালাজার স্লিদারিন এই ক্যাসেলে একটি গোপন চেম্বার নির্মান করে যান। যা একমাত্র তার আসল উত্তরসূরি ই খুলতে পারবেন। আর সেই গোপন চেম্বারের ভেতর রয়েছে মনস্টারের বসবাস। অন্য দিকে হগওয়ার্টসের গোস্ট নিয়ারিলি হেডলেস নিক, কলিন ক্রিভি পেট্রিফাইড হয় রহস্যজনক ভাবে। হ্যারি রন হারমোয়নি ধারনা করে এসব কিছুর পেছনে ড্র‍্যাকোর হাত থাকতে পারে, তাই তারা পোলিজুস পোশন ব্যাবহার করে ক্রাব আর গোয়াল এর রূপ ধরে ড্রাকোর কাছে যায় কথা বের করতে।
এদিকে হ্যারি মোয়ানিং মর্টালের বাথরুমে এসে একটি অদ্ভুত ডায়েরি পায়, যেটায় কিছু লিখলেই গায়েব হয়ে যায়। হ্যারি জানতে পারে ডায়েরীর মালিকের নাম টম রিডল। সে হগওয়ার্টসের একজন প্রাক্তন ছাত্র, হ্যারি ডায়রীর কাছে চেম্বার অফ সিক্রেটসের ব্যাপারে জানতে চায়, ডায়রী হ্যারিকে দেখায় অনেক বছর আগে হ্যাগ্রিড চেম্বারটি খুলেছিল, যা টম রিডল ধরে ফেলে। আর সে চেম্বারের মন্সটার আসলে একটি মাকড়শা যার নাম এরাগগ।
হ্যারি রন হারমোয়নি হ্যাগ্রিডের কাছে জানতে চায়, হ্যাগ্রিড বলে সে চেম্বার ওপেন করেনি, আর এরাগগ কাউকে হত্যাও করেনি, এই সময় জাদুমন্ত্রী কর্নেলিয়াস ফাজ সাথে লুসিয়াস ম্যালফয় এসে হ্যাগ্রিডকে ধরে আজকাবানে নিয়ে যায় পুনরায় চেম্বার খোলার অপরাধে। যাওয়ার সময় হ্যাগ্রিড বলে মাকড়শা দের অনুসরণ করো, সব উত্তর পাবা। অন্য দিকে হারমোয়নিও অজানা কারনে পেট্রিফাইড হয়ে যায়। রন আর হ্যারি মাকড়শা কে ফলো করতে করতে ডার্ক ফরেস্টের ভেতর চলে যায়, সেখানে দেখা হয় এরাগগ এর সাথে, এরাগগ জানায় চেম্বারে এমন এক মন্সটার আছে যে কিনা শুধু মাকড়শাকেই ভয় পায়। এই কথা বলে এরাগগ হ্যারি আর রন কে খেয়ে ফেলার অনুমতি দেয় তার বাচ্চাদের। সেখান থেকের রনের উড়ন্ত গাড়ি তাদের রক্ষা করে।
কিন্তু তারা কোন ভাবেই বের করতে পারছিলোনা চেম্বারের ভেতর কি রয়েছে কিভাবে এতো ছাত্রছাত্রী পেট্রিফাইড হচ্ছে। এদিকে জিনিয়াস হারমোয়নিও নেই, তারা হারমোয়নির কাছে গিয়ে তার হাতে একটি কাগজ পায়, যেখানে লিখা চেম্বারের ভেতর রয়েছে বাসিলিস্ক। যার চোখে চোখ পরলেই মৃত্যু অবধারিত,  আর বাসিলিস্ক যেহেতু একটা সাপ তাই হ্যারি তার চলাফেরা শব্দ সব টের পায়। কিন্তু কারো চোখ ই সরাসরি বাসিলিস্কের চোখে পরেনি তাই কেউই মারা যায়নি সবাই পেট্রিফাইড হয়েছে।
এসব জানতে পারার পরপর ই রনের ছোটবোন জিনিকে চেম্বারের ভেতর নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে বাঁচাতে গিল্ডরয় লকহার্টের উপর দায়িত্ব পরে। কিন্তু সে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে ধরে ফেলে রন আর হ্যারি, তাকে ধরে নিয়ে যায় মোয়ানিং মর্টালের বাথরুমে যেখানে রয়েছে চেম্বার অফ সিক্রেটসের দরজা। হ্যারি পার্সেলটাং ব্যাবহার করে দরজা খুলে ফেলে আর ভেতরে যায় তিনজন, সেখানে লকহার্ট পালাতে হ্যারি আর রনের উপর স্পেল ছুড়ে মারে কিন্তু স্পেল ব্যাকফায়ার করে নিজের ই মেমরী চলে যায়। অন্য দিকে হ্যারি চেম্বারের ভেতর ঢুকে দেখে জিনি মেঝেতে পরে আছে, পাশে দাঁড়িয়ে আছে ডায়েরীতে থাকা টম রিডল। টম রিডল বলে আমার নাম ই লর্ড ভল্ডমোর্ট। আজ জিনি মারা যাবে আর আমি বেঁচে উঠবো, চেম্বার আসলে জিনিকে দিয়ে আমি ই খুলিয়েছি।এবং অনেক বছর আগে আমি ই চেম্বার খুলেছিলাম। আমি ই সালাজার স্লিদারিনের আসল উত্তরসূরী। অপর দিকে কৌশলে হ্যারির জাদুদণ্ড ও নিয়ে নেয় টম রিডল, কিন্তু হ্যারিকে সাহায্যের জন্য ডাম্বেরলডোর তার ফিনিক্স পাখি আর হ্যাট পাঠায়, যার ভেতর থাকে গড্রিচ গ্রিফিন্ডোরের তলোয়ার,  ফিনিক্স বাসিলিস্কের চোখ অন্ধ করে দেয় আর হ্যারি সেই তলোয়ার দিয়ে বাসিলিস্ক কে হত্যা করে।আর বাসিলিস্কের দাঁত দিয়ে টম রিডলের ডায়েরী ধ্বংস করে ফেলে। সাথে সাথে জিনির জ্ঞান ফিরে আসে। বাসিলিস্কের একটি দাঁত হ্যারির হাতে ঢুকে যায়, কিন্তু ফিনিক্স পাখির চোখের পানির কল্যানে হ্যারি সে যাত্রায় রক্ষা পায়। যারা পেট্রিফাইড হয়েছিল তারাও ম্যাডাম পামফ্রের সেবায় সেড়ে উঠে।
পরবর্তীতে জানা যায় লুসিয়াস ম্যালফয় উইজলি ফ্যামিলের সাথে ঝামেলার সময় কৌশলে জিনির ব্যাগে টম রিডলের ডায়েরী রেখে দেয়, সেখান থেকেই জিনিকে সম্মোহিত করে এসব কাজ ঘটায় টম রিডলের স্মৃতি। আর এসব জানতে পেরে ম্যালফয় ফ্যামিলের হাউজ এলফ ডবি হ্যারিকে সাবধান করতে আসে। হ্যারি কৌশলে ম্যালফয়ে কাছ থেকে ডবিকে মুক্ত করে দেয় আর হ্যারিও তাকে মুক্ত ঘোষণা করে। যার ফলে ডবি একজন ফ্রি এলফ হয়ে যায়। আর আসল কালপ্রিট ধরা পরায় হ্যাগ্রিড ও আজকাবান মুক্তি পায়।
এভাবেই হ্যারি পটারের আরো একটি রোমাঞ্চকর বছরের সমাপ্তি হয়। রন হারমোয়নি হ্যারি যার যার বাড়িতে ফিরে যায় নতুন বছর শুরুর অপেক্ষায়।

মুভিতে অনেক প্লটহোল,প্লটজাম্প আছে! যা
অন্য মুভিতে গিয়ে ক্লিয়ার হয়, তাই প্রথম দেখায় মুগ্ধ না হলেও সব গুলো দেখার পর বুঝা যাবে হ্যারি পটার সিরিজের অন্যতম ইম্পরট্যান্ট মুভি এটা।
পার্সোনাল রেটিংঃ ৯.৫
আই এম ডি বি রেটিংঃ ৭.৪
রোটেন টমাটোঃ ৮৩%

হ্যারি পটার এন্ড দ্যা ফিলোসফার্স স্টোন রিভিউ


রিভিউ লিখা শুরু করার আগে জানা উচিৎ  হ্যারি পটার আসলে কে, হ্যারি পটার হলো অনাথ একটি ছেলে যে তার বাবা মাকে একটি কার এক্সিডেন্টে হারায় তারপর থেকেই সে  ডার্সলি ফ্যামিলিতে বড় হতে থাকে তার খালার তত্ত্বাবধায়নে। যেখানে সে বরাবর ই অবহেলিত নির্যাতিত,  সিড়িঘরের ছোট্ট কামড়ায় তার বসবাস, ঘরের ছোটখাটো কাজ করা, খালাতো ভাইয়ের অত্যাচার সহ্য করে আর খালাতো ভাইয়ের পুরনো হয়ে যাওয়া জামাকাপড় পরেই আস্তে আস্তে আমাদের হ্যারি পটার বড় হতে থাকে।

হ্যারি পটারের ভেতরে যে কিছু অদ্ভুত ক্ষমতা রয়েছে তা প্রথম বোঝা যায় একবার চিড়িয়াখানায় বেড়াতে গিয়ে, একটি সাপের সাথে সে পার্সেলটাং ভাষায় কথা বলে নিজের অজান্তেই। তার মনের চাওয়াতে সাপের খাচার কাঁচটি উধাও হয়ে যায় সাপটি মুক্তি পায়। কিন্তু এর রহস্য কি?  কেন ছেলেটি সকলের থেকে আলাদা?  তার সকল উত্তর মেলে ছেলেটির এগারোতম জন্মদিনের রাতে।
হগওয়ার্টস নামক কোন স্কুল থেকে হ্যারিপটারের নামে নিয়মিত চিঠি আসতে থাকে পেচা মারফত, প্রথমে কিছু কিছু চিঠি ছিড়ে ফেলা হয়, কিছু লুকনো হয় কিছু পুড়িয়ে ফেলা হয়, তবুও আংকেল ভার্নন আর আন্ট পেটুনিয়া এই অদ্ভুত চিঠি আসা কোন ভাবেই বন্ধ করতে না পেরে পালিয়ে যায় নির্জন একটি দ্বীপে, সব কিছু ছেড়ে,
সেখানেই আমাদের হ্যারি প্রতিবারের মতো একা একা জন্মদিন বানানোর প্রস্তুতি নেয় মেঝেতে শুয়ে। কিন্তু বিধিবাম,  এই নির্জন দ্বীপে ঝড়ের রাতে ঠিক বারোটায় উপস্থিত হয় দৈত্যাকার আকারের রুবিয়াস হ্যাগ্রিড। যে কিনা হগওয়ার্টস স্কুলের গেটকিপার, সে এসেই হ্যারি পটারকে খোঁজা শুরু করে এবং তাকে প্রথমবারের মতো বার্থডে উইশ করে।
সেদিন হ্যারি পটার জানতে পারে, তার সাথে ঘটা সকল অদ্ভুত  ঘটনার উত্তর। হ্যারি পটার সেদিন জানতে পারে সে কোন সাধারণ ছেলে নয়, সে একজন জাদুকর,  শুধু জাদুকর ই নয়,  জাদু দুনিয়ায় সে রীতিমতো বিখ্যাত একজন ছেলে, যেখানে বিখ্যাত সকল বইয়ে তার নাম রয়েছে।  সে এটাও জানতে পারে তার বাবা মা কার ক্রাশে মারা যায়নি! ঐতিহাসিক কোন কারনে মারা গিয়েছে সাহসী জেমস আর লিলি পটার। হ্যাগ্রিড তাকে এসেছে জাদুবিদ্যা শেখার স্কুল "হগওয়ার্টস স্কুল অফ উইচক্রাফট এন্ড উইজার্ডি" তে নিয়ে যেতে, যেখানের বর্তমান হেডমাস্টার স্মরণকালের সেরা হেডমাস্টার যার নাম "এলবাস ডাম্বেলডোর"  এবং তার নির্দেশেই হ্যারি  এতো বছর তার খালাদের পরিবারে ছিলো। কোন এক বিশেষ কারনে।
এগারো বছরের অবহেলিত ছেলে হ্যারি পটার এতো কিছু শুনে নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারেনা। সে ধরেই নেয় সে স্বপ্ন দেখছে বা সে আসলে আসল হ্যারি পটার নয়, কোথাও কোন ভুল হচ্ছে। কিন্তু হ্যাগ্রিডের সাথে "ডায়গন আ্যলিতে" যাদুসামগ্রী কিনতে যওয়ার সময় টের পায় তার সে আসলেই বিখ্যাত একজন ছেলে, যাকে একবার দেখতে পেয়ে সকলের চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়। সকলে তাকে দেখা মাত্রই চিনে যায়। হ্যারি হ্যাগ্রিডের সাথে তার প্রথম যাদুদণ্ড কিনে, আর প্রথমবর্ষের সকল প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে। তারপর কিংক্রস স্টেশনে হাজির হয় হওগওয়ার্টসের উদ্দেশ্যে এক রোমাঞ্চকর যাত্রার জন্য। সেখানে ট্রেনে তার পরিচয় হয় রন উইজলি আর হারমোয়নি গ্রেঞ্জারের সাথে।যারা হ্যারির কপালে থাকা সেই বিখ্যাত স্কার দেখে অবাক হয়ে যায়, এবং তারা তিনজনেই সর্টিং হ্যাটের মাধ্যমে গ্রিফিন্ডর হাউজ পায়।  অন্যদিকে হ্যারি পটারের সাথে বন্ধুত্ব করতে আসা অন্য রয়েল ফ্যামিলির ছেলে ড্র‍্যাকো ম্যালফয় পায় স্লিদারিন হাউজ! হগওয়ার্টস স্কুলে আরো দুটি হাউজ রয়েছে যথাক্রমে রেভেনক্ল আর হাফলপাফ।প্রতিটি হাউজের নামকরণ হয়েছে হগওয়ার্টসের চার প্রতিষ্ঠাকারীর নামে। প্রতিটা হাউজের নিজস্ব ইতিহাস রয়েছে।
স্কুলে এসে বিভিন্ন স্যারদের সাথে পরিচয় হয় হ্যারির,  পোশন শিক্ষার স্যার সেভেরাস স্নেইপের সাথে পরিচয় হয় যে কিনা সব সময় ডার্ক আর্টসের টিচার হতে চায়, ডার্ক আর্টস টিচার কুইরেলের সাথে পরিচয় হয়, গ্রিফিন্ডর হাউজের প্রধান প্রফেসর ম্যাকগোনাগল এর সাথে পরিচয় হয় যিনি হ্যারিকে পরবর্তীতে কুইডিচ খেলার সর্বকনিষ্ঠ সীকার হিসেবে নিযুক্ত করেন, 
হ্যারি দেখা পায় হগওয়ার্টস স্কুলের সর্বশ্রেষ্ঠ হেডমাস্টার প্রফেসর ডাম্বেলডোরের। এতো সবের মাঝে তার দিনগুলো স্বপ্নের মতো কাটতে থাকে। কিন্তু বিখ্যাত ছেলেটির বিপদ যেন কাটেইনা,  সিড়ির নিজস্ব নড়াচড়ার কারনে হ্যারি,রন, হারময়নি এক্সিডেন্টলি হগওয়ার্টসের নিষিদ্ধ এরিয়াতে চলে যায়, সেখানে গিয়ে ধরা খায় হগওয়ার্টের কেয়ারটেকার ফিলচের বিড়াল মিসেস নরিসের হাতে,তার থেকে বাঁচতে তিনজন একটি রুমের দরজার আড়ালে লুকায়, সেখানে গিয়ে তিন মাথাওয়ালা বিশাল কুকুর ফ্লাফির সামনে গিয়ে পরে তারা, কোনরকমে সেখান থেকে জীবন নিয়ে পালায় , তখন তাদের মাথায় খটকা লাগে এতো ভয়ংকর একটা প্রাণী এই ভবনের ভেতর কি করছে! তারা সে ব্যাপারে জানতে হ্যাগ্রিডের কাছে গিয়ে, জানতে পারে ব্যাপারটি খুবই গোপনীয়, তবে হ্যাগ্রিড ভুল করে নিকোলাস ফ্লামেলের নাম বলে ফেলে, এবং তারা বুঝতে পারে কুকুরটি আসলে ফিলোসোফার্স স্টোন প্রটেক্ট করছে যা কিনা যে কোন মেটাল কে স্বর্ণতে পরিণত  করে, আর অমৃত সুধা প্রোডিউস করে।  হ্যারি ধারনা করে প্রফেসর স্নেইপ সেই পাথরটি চুরি করতে চাচ্ছে, যার করনে সে কুইডিচ ম্যাচে হ্যারিকে মারতে চায় আর হ্যালোয়িনের দিন একটি আস্ত ট্রল কে ভবনের ভেতর ঢুকিয়ে দেয়।
হ্যারি,রন,হারময়নি তিনজন মিলে সেই কুকুরকে পার করে ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যায় আর সেখানে গিয়ে দেখতে পায় চেজবোর্ড, সেই চেজবোর্ডে দাবা না খেলে পার হওয়ার কোন উপায় নেই, রন সেই ভয়ংকর খেলায় লীড দেয় আর জিতে যায়, হ্যারি ভেতরে গিয়ে সেখানে স্নেইপের বদলে দেখতে পায় প্রফেসর কুইরেল কে,  আর জানতে পারে স্নেইপ তাকে মারতে নয় বাঁচাতে চেয়েছে, স্নেপের কারনেই হ্যারিকে কুইরেল মারতে পারেনি।কুইরেলের পাগড়ি খোলার পর হ্যারি দেখতে পায় তার পেছনে আরেকটি মাথা, যে কিনা ইউ নো হু বা লর্ড ভল্ডোমর্ট নামে পরিচিত। তাকে ক্ষমতায় আনতেই কুইরেল ফিলোসফার্স স্টোনটি খুঁজছে,  কিন্তু হ্যারি "মিরর অফ এরিসেড" এ দেখতে পায় হ্যারির পকেটে রয়েছে সে স্টোনটি। কুইরেল সেটি হ্যারির কাছে চাইলে হ্যারি দিতে রাজী হয়না, তখন ভল্ডোমর্ট হ্যারিকে মেরে ফেলতে বলে, কিন্তু হ্যারিকে স্পর্শ করা মাত্রই কুইরেলের হাত পুড়ে যায় কোন এক অজানা কারনে। হ্যারি তার হাত লাগিয়ে কুইরেল কে ধ্বংস করে এবং আরেকবার হ্যারির কাছে পরাস্ত হয় লর্ড ভল্ডমোর্ট। বাতাসে মিলিয়ে যাওয়ার আগে বলে যায় আমি আবার ফিরে আসবো।

এভাবেই হ্যারিপটার মুভির প্রথম ছবিটি শেষ হয়। এই ছবিতে তিন বাচ্চার বন্ধুত্ব সাহসিকতা অসাধারণ ভাবে ফুটে উঠেছে, যাদের সাহসিকতার উপর ভর করে গ্রিফিন্ডর হাউজ বাৎসরিক হাউজ কাপ জিতে, আর একটি বছরের সমাপ্তি হয়। সকলে যার যার বাড়িতে যায় ছুটি কাটাতে। হ্যারিও ফিরে যায় ডার্সলি পরিবারে অসংখ্য সুখ স্মৃতি নিয়ে।
হ্যারি পটারের প্রথম ছবি বা স্টার্টিং হিসেবে মুভিটি অসাধারণ।  মন কাড়ার মতো বলা চলে। ধাপে ধাপে একটি অনাথ ছেলের বিখ্যাত জাদুকর হয়ে উঠা খুব সুন্দর ভাবে দেখানো হয়েছে।

ছবিটি পার্সোনাল রেটিং-৯.৮
আইএমডিবি রেটিং- ৭.৫
রোটেন টমাটো- ৮১%

সীমানা পেরিয়ে মুভি রিভিউ


জলোচ্ছ্বাসের তোড়ে নির্জন দ্বীপে আটকে পড়েছে কালু আর টিনা। টিনা (জয়শ্রী কবির) জমিদার বংশের মেয়ে, লন্ডনে পড়তে যাবে শীঘ্রই আর কালু (বুলবুল আহমেদ) জেলে। কিন্তু এই দ্বীপে এসব পরিচয়, বিত্ত কোন কাজেই আসবে না। বাঁচতে হলে একসাথে চলতে হবে। এমনই এক গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে আলমগীর কবিরের সীমানা পেরিয়ে। ১৯৭৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটি তিনটি জাতীয় পুরস্কার পায়। পরবর্তীতে ব্রিটিশ ফিল্ম ইন্সটিটিউটের সেরা ১০ বাংলাদেশী চলচ্চিত্রর তালিকাতেও স্থান করে নেয়। আপাত দৃষ্টিতে এটাকে "বড়লোকের মেয়ের সাথে গরীবের ছেলের প্রেম" বিষয়ক চলচ্চিত্রের কাতারে ফেলতে পারেন। কিন্তু আমার মনে হয়েছে ছবিটি বিবিধ মার্ক্সিস্ট অ্যালিগোরিতে পরিপূর্ণ। আজকের লেখা সেসব ভাবনা নিয়েই। যেহেতু ছবিটার মূল বিষয় নিয়ে কথা বলবো, স্বাভাবিকভাবেই স্পয়লার চলে থাকবে। সিনেমাটি দেখা না থাকলে, আর না পড়াই ভালো। 
সীমানা পেরিয়ে নিয়ে বাতচিৎ আগে, এর পরিচালক আলমগীর কবিরকে নিয়ে একটু কথা বলা যাক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে গ্র্যাজুয়েশন করে, আলমগীর কবির অক্সফোর্ডে যান ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে। সেখান দুটো জিনিস তার জীবনের পুরো গতিপথটাই পাল্টে দেয়- বাম রাজনীতি আর সিনেমা। কবির দেখতে শুরু করেন বিখ্যাত সব ফিল্ম আর দেখা করে আসেন ফিদেল কাস্ত্রোর সাথে। দেশে ফিরেও তিনি সক্রিয়ভাবে বাম রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। সুতরাং তার ছবিতে কম্যিউনিস্ট সিমিওটিক্স থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়। 
সীমানা পেরিয়ে'র দুই মূল চরিত্র কালু আর টিনা। টিনাকে পুঁজিবাদী (Bourgeoisie) আর কালুকে শ্রমজীবী (Proletariat) শ্রেণীর প্রতিনিধি ধরলে, ছবিটা আরো পরিষ্কার হয়ে যায়। কালু মাটি কেটে রাস্তা বানিয়ে দেয়, দড়ি ফেলে টিনাকে উপরে উঠতে সাহায্য করে। অথচ দ্বীপে যাওয়ার পর থেকে, টিনা সারাক্ষণ ভয়ে থাকে কালু কখন তার কোন ক্ষতি করবে। সম্ভ্রম নিয়ে টিনার এই তটস্থটা যেন ধনিক শ্রেণীর প্যারানয়াকে তুলে ধরে। যাদের চিরাচরিত ভীতি হচ্ছে, "গরীবরা আমার সব কিছু লুটে নেবে"। কিন্তু তারা ভুলে যায়, প্রান্তিক মানুষের তৈরী করা পথ বেয়েই তাদের আজকের এই উত্থান। 
আমরা দেখতে পাই কালুর স্পীচ ইমপেডিমেন্ট (তোতলামি) আছে। কথা বলতে গিয়ে এই থেমে যাওয়া বা আটকে যাওয়া, শ্রমজীবী মানুষের পরিপূর্ণ বাক স্বাধীনতার অভাবকে ফুটিয়ে তোলে। ফ্রিডম অফ স্পীচের এহেন রূপক চিত্রায়ন অবশ্য খুব একটা বিরল নয়। মাজিদ মাজিদির বারান, অনুরাগ কাশ্যপের মুক্কাবাজ অথবা শহীদুল ইসলাম খোকনের বাঙলা (কিংবা আহমেদ ছফা'র ওঙ্কার উপন্যাসে) চলচ্চিত্রগুলোতে নারী চরিত্রদের নির্বাক হিসেবে দেখানো হয়েছে (বারান মেয়েটির কোন সংলাপ ছিলো না)। এগুলো আসলে পর্যায়ক্রমে আফগান শরণার্থী, ভারতের উত্তর প্রদেশের নারী ও বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের প্রতীক। বাক স্বাধীনতার এই সমস্যার সমাধান হিসেবে কবির একটা পরামর্শ দিয়েছেন। ছবিতে টিনা কালুর তোতলামি ও কথ্য ভাষা শুধরে দেয়। অর্থাৎ কিনা পুঁজিবাদী সমাজের এই প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে এগিয়ে আসা উচিৎ।
এই সিনেমায় আলমগীর কবির আরেকটা বিষয় সামান্য সময়ের জন্য স্পর্শ করেছেন। এক পর্যায়ে টিনার মা (মায়া হাজারিকা) টিনাকে বলে, "বিয়ের পরে তোর বাবা আমাকে রেপ করেছে"। স্ত্রীর কাছ থেকেও যে কনসেন্ট নিতে হবে, এই বিষয়টি আগে-পরের কোন বাংলা সিনেমায় পাইনি। উপমহাদেশীয় চলচ্চিত্রে প্যাট্রিয়ার্কি ও সোশ্যিয়ালিস্ট ফেমিনিজমের রূপায়ন নিয়ে অন্য কোন দিন আলাপ করা যাবে। সীমানা পেরিয়েতে ফিরে যাই।
সিনেমার শুরুতে টিনাকে ধনী এক ছেলে বিয়ে করতে চায়, কিন্তু টিনা রাজি হয় না। কালুর পাশাপাশি সেই ছেলেটির চরিত্রেও অভিনয় করেছেন বুলবুল আহমেদ। আমার মনে হয়েছে, দুটো চরিত্রেই বুলবুলকে নিয়ে কবির একটা বাহ্যিক সমান্তরালতা (প্যারালালিজম) তৈরী করেছেন। স্যুট-টাই পড়া বুলবুলকে ফিরিয়ে দিলেও, জেলে বুলবুলকে টিনা আপন করে নেয়। পোশাকের সাথে যে পরিচয়ের একটা সংযোগ আছে আর তা যে দ্বৈততার জন্ম দেয়, সেটা তো শেখ সাদীর কল্যাণে ইতোমধ্যে আমাদের জানা আছে। এটা মনে করিয়ে দেয় মৃণাল সেনের ভুবন সোম সিনেমাটির কথা। যেখানে উৎপল দত্ত পাখির খোঁজে সাহেবী পোশাক ছেড়ে গ্রামীণ পোশাক পড়েন, গাছের মাঝে লুকিয়ে থাকেন (প্রকৃতির কাছে ফিরে যান), কিন্তু (সুখ) পাখি তো অধরা। আর ইন্টারভিউ সিনেমাতে ধুতি-পাঞ্জাবী পড়ার কারণে রঞ্জিত মল্লিকের কর্পোরেট চাকরিটা হাতছাড়া হয়ে যায়। এখানে বলে রাখি, মৃণাল সেনের ছবিগুলোও কিন্তু বাম ঘরানার মতাদর্শে নির্মিত।
অনেকেই সীমানা পেরিয়ের গল্পের সাথে ভিয়ার স্ট্যাকপুলের "ব্লু ল্যাগুন" উপন্যাসের মিল পেলেও, আলমগীর কবির '৭০-এর জলোচ্ছ্বাস পরবর্তী একটা নিউজপেপার আর্টিকেল থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সিনেমাটি লিখেছিলেন। পরিচালক নিজেই এটিকে ফ্যান্টাসি চলচ্চিত্র হিসেবে বর্ণনা করেছেন। টিনা আর কালু জানে না কিভাবে তারা দ্বীপটিতে এসে উপস্থিত হলো। জলোচ্ছ্বাসের সময় ভূপেন হাজারিকা (যিনি নিজেও সারাজীবন সাম্যের জন্য গান করেছেন)-এর কণ্ঠে মেঘ থম থম করে গানটা শোনা যায়। গানের কথাগুলো ছিলো এরকম : 

"পুরনো সব নিয়ম ভাঙ্গে অনিয়মের ঝড়
ঝড়ো হাওয়া ভেঙ্গে দিও মিথ্যে তাসের ঘর
ভাঙ্গনের যে নেই পারাপার
তুমি আমি সব একাকার।"

টিনা আর কালু যে সীমানা পেরোয়; সেটা যতটা না সামাজিক বা ভৌগোলিক সীমানা, তার চেয়েও অনেক বেশি করে অর্থনৈতিক শ্রেণীর সীমানা। আর একটা তীব্র (রাজনৈতিক বিপ্লবের) জলোচ্ছ্বাস বোধ হয় পারে, সব শ্রেণীকে একই সমতলে নিয়ে আসতে।

Once Upon A Time In America (1984) Movie Review

Once Upon A Time In America (1984)

সার্জিও লিওনি! ইতিহাসের অন্যতম সেরা সিনেমা পরিচালকদের একজন। “ডলার'স ট্রিলজি” থেকে সার্জিও লিওনি আত্মপ্রকাশ করে পরিপূর্ণরূপে, যদিও তার নির্মিত প্রথম সিনেমা “They Stole A Tram” মুক্তি পায় ১৯৫৪ সালে। তার পরিচালিত ১১ টি সিনেমার মধ্যে ৫ টি নির্মিত হয়েছে ওয়েস্টার্ন ধারায়, যার প্রতিটি সিনেমা দর্শকনন্দিত হয়েছে, যার ধারা এখনও অব্যাহত রয়েছে। এটি লিওনি'র নির্মিত শেষ সিনেমা।

হ্যারি গ্রে এর “The Hoods” উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত এই সিনেমাটি ১৯৮৪ সালে ইতালিতে মুক্তি পায়। সিনেমাটি ৮৯৪ টি থিয়েটারে মুক্তি দেওয়া হয়। ২০ মিলিয়ন বাজেটে নির্মিত ২২৯ মিনিটের সিনেমাটি বক্স অফিসে মাত্র ৫.৩ মিলিয়ন আয় করতে সক্ষম হয়। বক্স অফিস ফ্লপ্ড! সিনেমাটি নির্মানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২৬ টি লোকেশন ব্যবহার করা হয়। IMDb এর ৭০ নাম্বার পজিশনে থাকা সিনেমাটি এক এবং অদ্বিতীয় সিনেমা হিসেবে অডিয়েন্স এবং ক্রিটিক্সের কাছে বর্তমানে সমাদৃত হয়েছে।

বন্ধুত্ব, প্রেম, বিশ্বাসঘাতকতা এসব নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা। তবে সিনেমায় এর রহস্যময় উপস্থাপন, সে তো কালে-ভদ্রে পরিলক্ষিত হয়। সার্জিও লিওনি এমনটাই করে দেখিয়েছেন এই সিনেমায়। সিনেমাটি Drama, Crime ক্যাটাগরীভুক্ত করা হলেও, এটি মূলত Psychological Drama, Crime Thriller পর্যায়ভুক্ত। কপোলা'র “The Godfather” এর মতো লিওনি'র এই সিনেমাটিও গ্যাংস্টার তৈরীর দৃষ্টান্ত বহন করে। এক অর্থে দুটি সিনেমাকেই তুলনা করা যায় এভাবে যে, প্রতিটি সিনেমা ই  আমেরিকায় তৎকালীন উঠতি পুঁজিবাদ এবং নতুন স্বপ্নে বিভোর হয়ে গড়ে ওঠা সন্ত্রাসবাদকে নির্দেশ করেছে। তবে “The Godfather” থেকে লিওনি'র এই সৃষ্টির সৃজনশীলতা কোথায়?

সিনেমায় প্রধান চরিত্রে ছিলেন রবার্ট ডি নিরো। স্কোরসিজি'র “Taxi Driver” এবং “Raging Bul” এর পরে নিরো এই সিনেমায় তার সেরা অভিনয় প্রদর্শন করেছেন। একইসাথে রহস্যময়, একশন এবং এডাল্ট সিকুয়েন্স গুলোতে তিনি ছিলেন দুর্দান্ত। সহ-অভিনেতা হিসেবে জেমস উডস ছিলেন অতুলনীয়। এছাড়া এলিজাবেথ ম্যাকগভার্ন এবং জো পেস্কি তাদের অভিনয়ে ছিলেন মনোমুগ্ধকর।

ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, সাউন্ড কম্বিনেশন, একশন, সিনেমাটোগ্রাফি, কস্টিউম, এডাল্ট সিন, স্ক্রিনপ্লে এসবের এক অনন্য মিশ্রন ঘটিয়েছেন লিওনি। বরাবরের মতোই স্ক্রিনে চোখ লেগে থাকার জন্য সৃজনশীল এই স্রষ্টা তার সৃষ্টিকে করেছেন সাফল্যমন্ডিত। প্রায় ৪ ঘন্টার এই মুভিটি আপনাকে পরিপূর্ণ তৃপ্তি দিতে পারবে এতটুকু বলাই যায়।

Plot Summary:- অন্ধকার কক্ষ, একলা রমনী। হঠাৎ আলোর আবির্ভাব, ক্লান্ত রমনীর মুখাবয়ব। হঠাৎ তিন আগন্তুকের প্রবেশ, প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে হত্যা। টেলিফোনের উৎকট শব্দ! ঘুম ভাঙে নুডলস এর। বৃষ্টিস্নাত অবস্থায় পুলিশের সাইরেন, ৩ টি লাশ। টেলিফোন বেজেই চলছে। কফিনাকৃতি বিশাল কেক পরিবহন করছে চারজন। কফিনের গায়ে লেখা “Prohibition”. সময়কাল ১৯৩৩। হঠাৎ করেই বয়স্ক নুডলস অবতীর্ন হন। ধাবিত হন তার নিজস্ব পথে। হঠাৎ করেই আবার পিছুটান, নুডলস ফিরে যায় তার শৈশবে। ছোট নুডলস এবং তার সঙ্গীদের অপরাধের চিত্র! নানা উপায়ে অর্থ সংগ্রহ করে ছোট গ্যাংস্টার গ্রুপ।

অত্যন্ত দুঃখবোধ হচ্ছে এটা ভেবে যে, আসলে সিনেমার প্লট তুলে ধরার সামর্থ্য আমার নেই। বিশাল দৈর্ঘ্যের এই সিনেমার নির্মানে ৪ টি সময়কাল তুলে ধরা হয়েছে। অগ্র-পশ্চাৎ-বর্তমান নিয়ে তুলে ধরা স্ক্রিনপ্লে যে কাউকে চমকে দিতে প্রস্তুত। বস্তুত “Once Upon A Time In America” সিনেমাটির তুলনা চলে শুধুমাত্র লিওনির অন্যান্য সৃষ্টির সাথে। লিওনি তার সততা, নিষ্ঠা এবং তীব্র আবেগ মিশ্রিত করেছেন চলচিত্রটি নির্মানে। ক্যামেরার অ্যাংগেল মাঝে মাঝে ইতালিয়ান মেলোড্রামা ভঙ্গির। যৌনতার দৃশ্যগুলি যেনো কৈশোরের আবেগভরা দৃষ্টি থেকে তৈরী, সেগুলো প্রচন্ড অসহ্যনীয়। তবে শেষে এসে সিনেমাটি তৈরী করেছে এক সাইকোলজিক্যাল প্রেসার। শেষ চমকের জন্য এটাকে মাস্টারপিস বললেও কম হয়ে যায়।

সিনেমাটি আপনি দেখুন কিংবা নাই-বা দেখুন, কিন্তু এটা আপনি অবশ্যই স্বীকার করতে বাধ্য হবেন যে, এমন সিনেমা দ্বিতীয়টি তৈরী করা সম্ভব নয়।

Memories of Murder (2003) Movie Review || মুভি রিভিউ

Memories of  Murder  (2003)

সাইথ কোরিয়ানরা তাদের মুভি দক্ষতায় দিনে দিনে ওয়ার্ল্ড মুভি লাভারদের মন জয় করে নিয়েছে। তাদের মুভির গল্পে আপনি একটু একটু করে ঢুকবেন আর শেষ করবেন একরাশ মুগ্ধতার ঢেকুর তুলে। এককথায় কোরিয়ানরা দর্শকের মন ব্রেন নিয়ে খেলতে জানে।

Memories of Murder মুভির পটভূমি তৈরী হয়েছে একটি সত্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে। ১৯৮৬-১৯৯১ তে দক্ষিন কোরিয়ার একটি ছোট্ট প্রদেশে ঘটে যায় বেশ কয়েকটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা। ঐ সময়ে হত্যা হতে থাকে একের পর এক মেয়ে। উদ্ভব হয় এক ভয়ঙ্কর সিরিয়াল কিলার এর।

মুভির শুরুটা হয় অল্পবয়স্ক এক নারীর মৃতদেহ খুঁজে পায় পুলিশ মাঠে সেটি দিয়ে।কোন ক্লু বা তথ্য কিছুই থাকে না। ঐ নারীকে মূলত ধর্ষন করে হত্যা করা হয়। পুলিশ যখন এই হত্যার রহস্য উন্মোচনে ব্যস্ত ঠিক তখনই একই জায়গায় আরেকটি ধর্ষিত নারীর মৃত দেহ।এবং এই দুটো খুনের মধ্য একধরনের মিল খুঁজে পায় পুলিশ।কি ধরনের মিল পায় পুলিশ তা আপনারা দেখলেই বুঝবেন…। এই খানে মফঃস্বল পুলিশের ভূমিকায় আশানুরূপ সাফল্য না পাওয়ায় সিউল থেকে এক গোয়েন্দাকে তলব করা হয়। মুভির মাঝে তথ্য প্রমাণ সংগ্রহের বেশ সময় আমরা বেশ কয়েকটি হাস্যরসাত্মক উপাদান খুঁজে পাবো।মোট কথা এই মুভিটি তে ড্রামা,রহস্য,কমেডি,ইমোশন সবই আছে।সেই শহুরে ডিটেকটিভ আর মফস্বলের ডিটেকটিভের মধ্য অন্তদ্বন্দ্ব আমরা এই খানে দেখতে পাবেন প্রবল,অনেকটা যেন আমাদের বাস্তব জীবনেই যেন অংশ। এরই মধ্য খুনি খুন করে আরো এক নারীকে।ডিটেকটিভদের তখন মাথা পাগল অবস্থা…নেই কোন ক্লু,নেই কোন সাক্ষি।এটা দেখে সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের লোকাল সিরিয়াল কিলার রসু খাঁর কথা মনে পরে গেল। সময় অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে ডিটেকটিভরা আরো সতর্ক হওয়ার চেষ্টা করলো। এমন হতে হতে তারা একটা ক্লু পেলো..খুনি একটি নিদিষ্ট সময়ে খুন করে..এবং খুন করার আগে সে রেডিওতে একটা নিদিষ্ট গানের রিকোয়েস্ট পাঠায়।অনেকটা কাকতালীয় হলেও তারা এই তথ্য নিয়ে খোঁজা শুরু করে খুনিকে। ঠিক সময় অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে,শহুরে ডিটেকটিভ এক নারী কে খুঁজে পায় যাকে কিনা খুন করেনি ঐ খুনি। সে তার কথা রেকর্ড করে এবং একটা তথ্য পায়,যে খুনির হাত মেয়েদের মত নরম। এরই মাঝে ঘটে যায় আরো কিছু ঘটনা…পুলিশ সন্দেহের বশবর্তী হয়ে গ্রেফতার করে এক ব্যাক্তিকে চরম এক শ্বাসরুদ্ধ কর পরিস্থিতিতে। আবার সেই রেডিওর গানের সূত্র ধরে ডিটেকটিভরা গ্রেফতার করে এক ব্যক্তিকে যে কিনা আবার সামরিক বাহিনী হতে ফেরত।এবং তারা দেখতে পায় তার হাত অনেক নরম,ঠিক যেন মেয়েদের মত।কিন্তু তাদের কাছ কোন ক্লু নেই এই ব্যাক্তিকে আটকে রাখার জন্য।এক সময় তারা তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। এরই মাঝে ঘটে আরো একটি হত্যাকান্ড।ডিটেকটিভ নিশ্চিত থাকে যে এই ব্যক্তিই খুনি। তারা তার DNA টেষ্ট করানোর জন্য চেষ্টা করে কিন্তু এই পরীক্ষার ব্যবস্থা তখন সেখানে ছিলনা বিধায় তারা পরীক্ষার সব উপকরন আমেরিকায় পাঠায় এবং ঐ ব্যক্তিকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। অনেকটা সময় অতিবাহিত হয়…শহুরে ডিটেকটিভ ফলো করতে থাকে ঐ সন্দেজনক ব্যক্তিকে এবং একদিন বৃষ্টির রাত আসে এবং রেডিওতে সেই গান বাজে। ডিটেকটিভ তখন পাগলপ্রায় খুনীর পিছু নিতে।কিন্তু পারে না। ঐ দিন খুন হয় আরো এক কিশোরী। অনেকটা উন্মাদ হয়ে শহুরে ঐ ডিটেকটিভ হামলে পড়ে ঐ ব্যক্তির উপর। এর মধ্যে চলে আশে DNA টেস্টের রিপোর্ট। কিন্তু কি কি ছিলো সেই রিপোর্টে? জটলা কি খুলবে?

” Memories Of Murder ” পরিচালক Bong Joon-ho এর ২য় ছবি এবং এ ছবি তাকে A লিস্টেড কোরিয়ান পরিচালকদের তালিকায় নিয়ে যায়। সে ২০০০ সালে এ ছবির কাজ শুরু করলেও প্রথম ৬ মাস স্ক্রিপ্ট লেখাও শুরু করেন নি ,শুধু মার্ডার সম্পর্কিত তথ্য কালেক্ট করে গেছেন। এ থেকেই বোঝা যায় এ মুভি তৈরির আগে কতটা রিসার্চ করা হয়েছে।

ছবির প্রধান দুই অভিনেতা ছিল Song Kang-ho আর Kim Sang-kyung। একজন গ্রাম্য ডিটেকটিভ ( মারামারিতে,শামানিজম এ বিশ্বাসী ) আরেকজন শহুরে ডিটেকটিভ ( information,document এসবে বিশ্বাসী ) .পুরো মুভিতে তাদের খুনসুটি আর সময়ের সাথে সাথে চরিত্রের transformation দারুন লেগেছে।বিশেষ করে গ্রাম্য ডিটেকটিভ চরিত্রে Song Kang-ho এর অভিনয় ছিল একেবারে চোখ ধাধানো। এ দুর্দান্ত অভিনয়ের জন্য সে ওই বছর Grand Bell Award , Chunsa Film Awards , Korean Film Awards সহ প্রায় প্রতিটি Award ceremony এ Best Actor এর Award জিতে নেয়।
Memories of  Murder  (2003)

এ ছবি মুক্তির পরে critical and commercial , দুই দিক থেকেই প্রচুর acclaim পায়। ২০০৩ সালের দক্ষিন কোরিয়ার সবচেয়ে ব্যবসাসফল ছবি ছিল এটি। আর সে বছর কোরিয়ার প্রায় সব award এর সেরা ছবির পুরস্কার জিতে নেয় এ ছবি। বর্তমানে IMDB এর টপ ২৫০ এর list এ এই মুভি রয়েছে এবং দক্ষিণ কোরিয়ার অন্যতম সেরা ছবি হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পেয়েছে।

Tumbbad Movie Review || টুম্বাত মুভি রিভিউ


মুভি সম্পর্কে লিখতে গেলে সর্বপ্রথম যে জিনিসটা সামনে আনতে হবে সেটা হলো মুভির জনরা, মুভির জনরা কি? হরোর ফ্যান্টাসি ঘরানার এই মুভিটি সচারাচর হরোর উপাদানকে উপেক্ষা করে আপনাকে দিয়েছে এক ব্যতিক্রম কনসেপ্ট। মুভির শুরুর মিথকে যদি কোনো হিস্টোরির সাথে মিলিয়ে আপনি জনরা নির্ধারণ করতে যান তখন হরোর ফ্যান্টাসির সাথে হিস্টোরিক্যাল পিরিয়ড ড্রামার মিশেলে তৈরী মুভিটি, মুভির শুরুর মিথ কোনো হিস্টোরির সাথে মিলে কিনা, এই প্রশ্নের উত্তরে বলতে হবে, হিন্দুত্ববাদে এমন কোনো মিথ না পাওয়া গেলেও গ্রিকত্বত্ত্বে কিছুটা মিল পাওয়া যায়।

স্টোরিঃ-
মুভিটি দুবার শুট করা হয়েছে, এর আগে বছর ছয়েক আগে মুভিটিকে শুট করা হয় বাট ডিরেক্টর যে জিনিসটাকে উপস্থাপন করতে চেয়েছে সেটা সেই শুটে উঠে আসেনি, তাই তিনি নতুন স্ক্রিপ্টে আবারো শুট করেন। মুভিটিকে ৩টি কালে বিভক্ত করেছেন পরিচালক, খোলা চোখে মনে হবে "লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু" এই প্রবাদকে কেন্দ্র করে মুভির কনসেপ্ট এগিয়েছে। ১ম অধ্যায় এগিয়ে যায় ১৯১৮ সনের তুম্বাড় গ্রামের এক ফ্যামেলিকে কেন্দ্র করে, যেখান থেকে পরিবারটি পথ মাড়ায় অন্য দিকে। ২য় পর্বে দেখানো হয় ১৫ বছর পর প্রধাণ চরিত্রের আবারো সেই তুম্বাড়ে গমন, এবং লাস্ট অধ্যায়তে দেখতে পাই মূল চরিত্র তার ফ্যামেলির ভবিষ্যৎ নির্ধানের যুদ্ধ। এ গল্প যেনো এক অনন্য আর্ট, যেখানে ফ্যান্টাসি, হরোর, ড্রামা সবকিছুকে নিয়ে এসেছে।

চরিত্রঃ-
মেইন চরিত্র ভিনায়কের প্রাপ্ত বয়সের ক্যারেক্টারে যে অভিনয় করে সে হলো সোহান শাহ, এতো দারুন ও সাংঘাতিক অভিনয় অন্য কারো পক্ষে সম্ভব হতো কিনা জানা নেই, বডিল্যাঙ্গুয়েজ থেকে শুরু করে প্রতিটা সংলাপ ছিলো অসাধারণ, দৃঢ় এক লোভী পৌরষ কে যেভাবে প্রেজেন্ট করেছে সত্যিই অতুলোনীয়, আর ভিনায়কের ছোটো বেলার চরিত্র ও তার ভাইয়ের চরিত্র এবং ভিনায়কের ছেলের চরিত্রে যে শিশুগুলা ছিলো, তারাও নিজেদের বেস্টটা দিয়েছে, অসাধারণ বললেও কম হবে। সাবলিল ও পর্যাপ্ত অভিনয় ছিলো পুরো মুভিজুড়ে। আরেকটা জিনিস আপনি জানলে আপনার চোখ আসমানে উঠে যাবে, ভিনায়কের ছেলের চরিত্রে যে ছেলেটা অভিনয় করে, ভিনায়কের দাদির চরিত্রে সেই অভিনয় করে, আমি ওর ফ্যান হয়ে গেছিরে। মোহাম্মাদ সামাদ ওর নাম, কতোটা ট্যালেন্টেড হলে এটা সম্ভব ভেবে দেখেছেন? সেরা সেরা।

ঘটনাপ্রবাহ/পরিবেশঃ-
এই এখানেই পরিচালক এক অনন্য আর্টের পরিচয় দিয়েছেন, মুভিটা হরোর, বাট কোনো ভীতিকর কিছু পাবেন না মুভির শুরু থেকেই, বাট ডিরেক্টরের স্ক্রিনপ্লেই এতো অসাধারণ ছিলো যে, কিছু না দেখেও অজানা এক ভীতি সবসময়ই আপনার মধ্যে কাজ করবে, ভিনায়কের দাদীমা এক আশ্চর্য ক্যারেক্টার ছিলো পুরো মুভিতে, মুভির শুরু থেকে বদ্ধ ঘরে বন্দী থাকে, বাট পরিবারের সবার মাঝে তার ভীতিটাকে এমনভাবে প্রেজেন্ট করেছেন পরিচালক যে অডিয়েন্সদেরও গা ছমছম করে উঠবে, এরপর যখন দাদীমাকে প্রথম স্ক্রিনে আনা হয়, আপনি শিউরে উঠবেন নিশ্চিত, এবং স্তব্ধ হয়ে যাবেন, সে এক সাংঘাতিক পরিস্থিতি, এরপর সেই ব্রিটিশ আমলকে এতো সুন্দরভাবে স্ক্রিনে আনেন যেনো ডিরেক্টর আর্টের কারিগর। লাস্টের ঘটনাপ্রবাহ আপনাকে এমন আজিব ঘটনার মুখোমুখি করবে যেটা হয়তো আপনি ভেবে পাবেন না এখন।

সিনেমাটোগ্রাফীঃ-
মুভির মূল শক্তি ছিলো এই সিনেমাটোগ্রাফিতে, আপনি এই মুভিটাকে গভীরভাবে দেখলেই বুঝবেন আসলে দারুন সিনেমাটোগ্রাফি একটা সিনেমাকে কোন লেভেলে নিয়ে যেতে পারে, একদম শুরুর তুম্বাড় শহরকে যেভাবে প্রেজেন্ট করা হয় তা ছিলো নয়নাভিরাম, সিনেমাটোগ্রাফার পংকজ কুমার, নিঃসন্দেহে তার ক্যারিয়ারের অন্যতম একটি সেরা কাজ আমাদের উপহার দিয়েছেন। গা ছমছম করে তোলা তুম্বাড় গ্রামের এমন নিরিবিলি, বৃষ্টিস্নাত ও অন্ধকারচ্ছন্ন পরিবেশ, মুভির প্রতিটি দৃশ্যে, বিশেষত ভিনায়কের বেড়ে উঠা বাড়ি, বিভিন্ন অংশে আবাসস্থলে যে থমথমে ভাব বজায় ছিল, তা আপনাকে কোনো রকম ভূত-পেত্নীর আগমন ছাড়াও  অস্বস্তিকর ও ভীতিকর করে ছাড়বে তার উপর সিনেমার ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর পরিস্থিতিকে আরও গাম্ভীর্যপূর্ণ করে তুলেছিল। কিছু দৃশ্যের অভূতপূর্ব কাজ একদম পিলে চমকে দেবে আপনাকে। এসবই ছিলো ডিরেক্টর ও সিনেমাটোগ্রাফির যৌথ কেলমা। তবে সিনেমাটোগ্রাফার না হলে এসব সম্ভব হতোনা।

নাহ, রিভিউকে আর বড় করবোনা, শুরু থেকেই ইচ্ছা ছিলো রিভিউকে সংক্ষেপ করবো, বাট মুভিটা আমাকে এতোটাই মুগ্ধ করেছে যে, বড় হয়ে গেলো, আরো তিন ডবল করলেও মুভি নিয়ে আমার অভিব্যক্তি শেষ হবেনা। এক কথায় বলতে গেলে মুভিটি ছিলো বলিউডের হরোর মুভির এক অনন্য সৃষ্টি, যা বলিউডকে আরো সমৃদ্ধি এনে দিলো।

Pihu (2018) Movie Review || পিহু (২০১৮) মুভি রিভিউ


প্লট বা ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক না,আমাকে যেই জিনিসটা একদম থ করে দিয়েছে সেটা হলো,ফিল্মের মেইন এবং একমাত্র অভিনেতা একটা ২ বছরের বাচ্চা মেয়ে।হ্যা অন্য একজন মহিলা যে বাচ্চা মেয়ে পিহুর মায়ের ভূমিকায় ছিলেন,তিনিও স্ক্রিনে একটু পরে পরে এসেছিলেন কিন্তু তিনি ছিলেন মৃতা একজন।পুরা ৯০ মিনিটের ফিল্মে একটা ২ বছরের বাচ্চা মেয়ে,তার চলন–বলন,তার আধো আধো কথা!পরিচালককে একটা স্যালুট দিতেই হয় যে ২ বছরের বাচ্চাকে দিয়ে এমন অভিনয় করাতে পেরেছেন।অভিনয় তো করিয়েছেন আবার ডাবিং ও করিয়েছেন এই বাচ্চা মেয়েটাকে দিয়ে।হ্যাটস অফ!

পিহুর ২য় জন্মদিন হলো।পরদিন তার বাবার কোলকাতা যেতে হবে একটা জরুরী মিটিং এর জন্যে।জন্মদিনের পার্টির শেষে পিহুর মায়ের সাথে তার বাবার ভীষণ ঝগড়া হয়।পিহুর মা সন্দেহ করে পিহুর বাবার সাথে তারই বান্ধুবি এবং পিহুর বাবার কলিগের অনৈতিক সম্পর্ক আছে।এই নিয়ে তুমুল ঝগড়া।পিহুর বাবা সকালে ইস্ত্রি অন রেখেই রাগারাগি করে এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে চলে যায়।এবং পিহুর মা আয়নায় লিপস্টিক দিয়ে সুইসাইড নোট লিখে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করে।পিহু ঘুম থেকে উঠে মাকে জাগানোর অনেক চেষ্টা করে,কিন্তু মা আর জাগে না।ঐদিকে বাবাও বাসায় নেই।তারপর সেই একাকী পিহু ঘটাতে থাকে নানা ঘটনা।

এই ফিল্মে একটা জিনিস বুঝা গেলো যে আমরা শহুরে মানুষ কি পরিমাণ যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছি।প্রতিবেশীরা আরেকজন প্রতিবেশীর গালমন্দ করেই সময় পায় না,খবর রাখবে কিভাবে?আমাদের অবশ্যই আরো বেশি সচেতন হওয়া উচিত।

স্যার বলেন,বয়স্কদের থেকে বাচ্চারা বেশি ভালো অভিনেতা।শুধু ভালো না,বাচ্চারা ভয়ঙ্কর ভালো অভিনেতা।তাদের এত কিছু বুঝানোর দরকার নেই যে এই শট,এই ডায়লগ হেনো–তেনো।তাদেরকে বলো,অভিনয় একটা খেলা।তারা একদম খেলে দিবে।
পর্দায় এই বাচ্চা পিহুকে দেখে সেটাই বুঝলাম।সে অভিনয় করছিল না,সে খেলছিল।
অসাধারণ ।

Sleep Tight (2011) Movie Review || মুভি রিভিউ


“Let's wipe that smile off that face”

স্প্যানিশ চলচিত্র জগতের আলোড়নকারী একটি সাইকোলজ্যিকাল থ্রিলার  ফিল্ম Jaume Balagueró এর “Sleep Tight”. ২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মুভিটি সারা বিশ্ব জুড়ে দর্শকনন্দিত হয়। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় আরেকটি মাত্রা যুক্ত হয় যখন দক্ষিন কোরিয়ায় এর রিমেক করা হয় “Door Lock” নামে। মাত্র ২ টি প্রধান চরিত্র এবং গুটিকতক প্বার্শ-চরিত্রে মুভিটি অনেকাংশে অবাক করার মতো প্রতিক্রিয়া পেতে সক্ষম।

বাসায় একা? ঘুমাচ্ছেন? ঘুমানোর আগে খেয়াল করেছেন, কেউ বিছানার নিচে আছে কিনা কিংবা ওয়াশরুমে অথবা লুকিয়ে অন্য কোথাও? ঘুম থেকে উঠে বুঝতে পারবেন কি ঘটে গিয়েছে আপনার সাথে, গত রাত্রে?
হয়তো এমনই সব ভাবনার মুখোমুখি হবেন মুভিটা শেষ করার পর।

Plot Summary:- সিজার একটি এপার্টমেন্টের প্রহরী। ইহজগৎে তার একটি মাত্র সমস্যা, সে সুখী নয়। ছোটখাটো আনন্দে তো নয়ই বরং তার জীবনের সবচেয়ে আনন্দঘন ঘটনাও তাকে সুখী করতে পারেনি। তার জীবনে নেই কোনো অনুপ্রেরনা, নেই উৎসাহ, নেই বেঁচে থাকার জন্য বিন্দুমাত্র লক্ষ। যন্ত্রনাদায়ক এই জীবন সিজারের জন্য অসহ্য হয়ে উঠে। কিন্তু এপার্টমেন্টের সকল ভাড়াটিয়ার সাথে তার চমৎকার সম্পর্ক। অন্যের উপকারে সে সর্বদা এগিয়ে আসে। কিন্তু এটা তার মুখোশ মাত্র, অন্যের দুঃখেই বরং সে একটু আনন্দের ছোঁয়া পায়। এপার্টমেন্টের এক হাসিখুশি এবং প্রানবন্ত তরুনী ক্লারা। কোনো দুঃখই যেনো তাকে স্পর্শ করেনা। সিজারের লক্ষ্য ক্লারার জীবনের হাসিটুকু ছিনিয়ে নিয়ে আলতো করে কান্নার ছোঁয়া লাগিয়ে দেওয়া, বিনিময়ে জীবনে একটুখানি প্রশান্তি লাভ।

কাহিনী এগিয়ে যাবে ধীরে আর আপনাকে নিয়ে যাবে রোমাঞ্চকর এক অতিমানবীয় অনুভূতির মধ্য দিয়ে। সমগ্র চিত্ত বিকৃত হয়ে দংশন করবে যখন মনে হবে আমরাও তো মাঝে মাঝে অন্যের অপকার করে/দেখে আনন্দ পাই কিন্তু বিনিময়ে অপরপক্ষ কি নিদারুন কষ্ট অনুভব করে।

“Cell 211” মুভিতে দুর্দান্ত অভিনয় করা Luis Tosar 'সিজার' চরিত্রে নিজেকে আবির্ভূত করেছেন এমন এক দ্বৈত চরিত্রে, যেখানে তার সমগ্র প্রতিভা যেনো বিকশিত হয়েছে। ক্লারা চরিত্রে ছিলেন Marta Etura, যার হাসিখুশি মুখটা আপনাকে নিয়ে যাবে অন্য এক ভুবনে।

অসাধারন স্ক্রিনপ্লে, ভয়ংকর শীতল এটিটিউড, প্রতি মুহূর্তে রোমাঞ্চকর ছোঁয়া, ফিনিশিং এ অবাক হওয়ার অনুভূতি নেওয়ার জন্য “Sleep Tight” একটি উৎকৃষ্ট মুভি। থ্রিলার-সাসপেন্স প্রেমীদের জন্য মাস্ট সি মুভি।

হিংসা, ঈর্ষা থেকে নিজেকে দূরে রাখুন, নিজে সুস্থ থাকুন এবং ভালো রাখুন কাছের মানুষটিকে।

© movie review bd